নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় মহামারি করোনাকে উপেক্ষা করেই রোপা-আমন ধান রোপনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। যেনো দম ফেলার সময় নেই এলাকার চাষি ও কৃষিশ্রমিকদের মাঝে। করোনা নিয়ে কোনো ধরনের ভ্রুক্ষেপ নেই শ্রমিকদের। চাষিরা চায় যেভাবেই হোক জমিতে আবাদ করতেই হবে। তাই করোনা মাথায় নিয়ে তেমন কোন চিন্তাভাবনা নেই তাদের।
এ নিয়ে মঙ্গলবার উপজেলার দুর্গাপুর সদর ইউনিযনের ফান্দা গ্রামে গিয়ে দেখাগেছে, আমন ধান রোপনে ক্ষেতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষিশ্রমিকরা। অত্র এলাকায় পুরুষ আদিবাসী শ্রমিকদের চেয়ে পাশাাশি নারী আদিবাসী শ্রমিকদের বেশ চাহিদা রয়েছে। তবে আদিবাসি নারী শ্রমিকদের অভিযোগ পুরুষদের সমান কাজ করেও তারা ন্যায্য মজুরী পায় না। জীবনের অনেকটা সময় নারী কৃষি শ্রমিক হিসাবে কাজ করেও মজুরী প্রাপ্তির বৈষম্য রোধ করা গেলো না।
উপজেলার বাকলজোড়া, কাকৈরগড়া,কুল্লাগড়া, দুর্গাপুর, বিরিশিরি ইউনিয়ন গুলোতে আমন ধানের চারা রোপন প্রায় শেষ হলেও কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কাজের চাপ বেড়েছে বলে দেখাগেছে। অত্র জমি গুলো নীচু এলাকাতে হওয়ায় বিভিন্ন জাতের আমন ধান চাষের মধ্যে ব্রী ৪৯ এবং ব্রী ৩২ ধানের আবাদে সাচ্ছন্দবোধ করেন কৃষকগন। এ নিয়ে জাগিরপাড়া গ্রামের কৃষক মহিবুল ইসলাম ও হায়েত আলী এ প্রতিনিধি কে বলেন, রোরো ধান কাটার পর পরই জমি গুলোকে আমন চাষের উপযোগি করে তুলতে মাঠে কাজে লেগে যেতে হয় আমাদের। দেড়িতে ধান লাগাইলে আগাম বন্যার পানিতে বীজতলা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বিশ^জিৎ হাজং বলেন, গত মাস তিনেক আগে বোরো ধান কেটেছি। আগাম বন্যার ভয়ে নানা সমস্যা ও শত ব্যস্তাতার মধ্যেও আমন ধান চাষ শুরু করেছি। তবে এখন পর্যন্ত সার, কিটনাশক কৃষি শ্রমিকের সমস্যায় পড়তে হয়নি। তবে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ আমাদের এলাকা পরির্দশন বা কোন পরামর্শ দিতে এখন পর্যন্ত আসেনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর রহমান এ প্রতিনিধি কে বলেন, এবার দুর্গাপুর উপজেলায় বিভিন্ন জাতের আমন ধান চাষের লক্ষ্য মাত্রা ১৬ হাজার ১শ হেক্টর এবং বীজতলা তৈরী হয়েছে ১ হাজার ১শ ৫০ হেক্টর। এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৪শ হেক্টর জমি। বীজতলা তৈরী ও চারা রোপনে এখন পর্যন্ত কৃষকদের তেমন কোন সমস্যা হয়নি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আমন ধানের চারা রোপনের লক্ষ্য মাত্রা শেষ হলে দুর্গাপুর উপজেলায় আমন চাষের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।