সালিস বৈঠকে কিশোরীকে বিয়ে করা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের আলোচিত সমালোচিত চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার এবার পিটালেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কর্মীকে। শনিবার বেলা ১১টায় পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে তাঁর ইচ্ছানুযায়ী করোনার টিকা না দেয়ায় দুই হাতে কিল ঘুষি আর লাথি মেরে অজ্ঞান করে দেন স্বাস্থ্য কর্মীকে। আহত ওই স্বাস্থ্য কর্মীর নাম আল আমিন সিকদার। তিনি ওই ইনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারি হিসাবে কর্মরত। বাড়ি কনকদিয়া ইউনিয়নের ঝিলনা গ্রামে। আল আমিন মুক্তিযোদ্ধা আবদুল বারেক সিকদারের ছেলে। এ সময় অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন ইউনিয়ন সহকারি স্বাস্থ্য পরির্দশক তাসলিমা নাজনিন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচও)প্রশান্ত কুমার সাহাকে।
আল আমিন সিকদার বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী রেজিস্ট্র্রেশন করে আমরা কনকদিয়া ইউনিয়নে ৬০০ জনকে করোনা ভ্যাকসিন দিব। এজন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করে কার্যক্রম শুরু করি। কিন্তু সে (চেয়ারম্যান সাহেব) বেলা ১১টার সময় এসে আমাদেরকে বলেন যারা ভ্যাকসিন নিতে আসছে তাদের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি রেখে ভ্যাকসিন দিয়ে দেন। আমি সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী রেজিস্ট্রশনের কথা বললে তিনি (শাহীন চেয়ারম্যান) ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে দুই হাত দিয়ে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি এবং লাথি মারেন। আমি অজ্ঞান হয়ে ফ্লোরে পড়ে যাই। একপর্যায়ে আমার সহকর্মীদের সেবায় আমি সুস্থ হয়ে উঠি। এরপর শুনি তাসলিমা আপা (ইউনিয়ন সহকারি স্বাস্থ্য পরির্দশক) ও ইউএইচও স্যারকে গালাগালি করেছেন তিনি।’ তাসলিমা নাজনিন বলেন, ‘যে অশ্লীল ভাষায় আমাকে আর ইউএইচও স্যারকে গালাগালি করেছে তা মুখে শোভা পায় না।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘আমার স্বাস্থ্য কর্মী আল আমিন সিকদার ভ্যাকসিন কার্যক্রম শেষ করে আমাকে রাতে ফোনে জানিয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে সরকারি বিধি অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নিব।’
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার বলেন, ‘নিজেদের দোষ ডাকার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। যারা আইডি কার্ড নিয়ে আসবে তারা টিকা পাবে। অথচ এখানে টিকা দিতে এসে স্বাস্থ্য কর্মীরা নিজেদের আত্মীয় স্বজনকে টিকা দিচ্ছে। ফলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় আমি এর প্রতিবাদ করেছি। কাউকে মারধর কিংবা গালাগালি করার অভিযোগ সত্য না।
উল্লেখ যে, ২৫জুন সালিস বৈঠকে এক কিশোরীকে জোড় পূর্বক বিয়ে করে ব্যাপক সমালোচিত হন। এর আগে একাধিক সরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে মারধর করে ব্যাপক সমালোচিত হন। সে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। পরপর দুইবার নৌকা প্রতীক নিয়ে কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি।