লিভার সিরোসিস রোগটির কথা শুনলেই আমরা আতঙ্কিত হই। কারণ এই অসুখটি সারে না। দীর্ঘ দিনের লিভারের কোনো অসুখ থাকলে, জন্ডিস হয়ে থাকলে কিংবা অতিরিক্ত মদ্যপান করলে এই রোগ হতে পারে। তবে ডায়াবিটিস বা ওবেসিটি যাদের রয়েছে, তাঁরাও সতর্ক না হলে এই রোগ থাবা বসাতে পারে শরীরে। সময়ে ধরা পড়লে এই রোগটির জটিলতা থেকে অনেকখানিই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগটি ধরতেই এত দেরি হয়ে যায়, তখন আর কিছু করা সম্ভব হয় না। লিভার সিরোসিস হওয়ার শুরুতেই শরীর কিছুকিছু সংকেত দিতে থাকে। এইগুলি কখনওই উপেক্ষা করবেন না।
কালশিটে
শরীরে ঘনঘন কালশিটে পড়ে কি? তা হলে সতর্ক হোন। আমাদের লিভার ভিটামিন কে-এর সাহায্যে একটি প্রোটিন উৎপাদন করে যা রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে। লিভার পুরনো ও ক্ষতিগ্রস্ত রক্তের কোষগুলির ভাঙনেও সহায়তা করে। লিভার যদি ক্ষতিগ্রস্ত থাকে তাহলে এটি প্রয়োজনমতো প্রোটিন উৎপাদন করতে পারে না। কাজেই সহজেই কালশিটে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
জন্ডিস
জন্ডিস খুবই পরিচিত একটি অসুখ। এই অসুখে ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলদে হয়ে যায়। লিভার থেকে নিঃসৃত হওয়া হলুদ-কমলা রঙের পিত্ত বিলিরুবিনের পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে জন্ডিস হয়। লিভারে ক্ষত তৈরি হলে লিভার শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না। তখনই এই অসুখ হয়।
পা ও গোড়ালিতে জ¦ালা
পা ও গোড়ালিতে জ¦ালাভাব হলে এখনই সতর্ক হোন। অ্যালবুমিন প্রোটিনের উৎপাদন কমে গেলে এইরকম সমস্যা হয়। এই প্রোটিন রক্তনালী থেকে অন্যান্য টিস্যুতে রক্তের ছড়িয়ে পড়াকে প্রতিহত করে। রক্তে এই প্রোটিনতরলের পরিমাণ কমে গেলে তা রক্তনালিকায় জমা হওয়া শুরু হয়।
তলপেটে তরল জমা
দীর্ঘ দিনের লিভারের অসুখ থাকলে পেটের তলদেশে তরল জমা হয়ে পেট ফাঁপার সমস্যার দেখা দিতে পারে। দেখে মনে হতে পারে পেটটি ফুলে আছে। এইরকম সমস্যা হলে সতর্ক হোন।
ওজন কমা
খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ না করে কিংবা শরীরচর্চার কসরত না করেই আপনাআপনি ওজন কমছে? তাহলে কিন্তু ভাবার বিষয়। উপেক্ষা না করে সময় থাকতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: আনন্দবাজার।