ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন রয়ে গেছে। বৃষ্টিপাত একটু কম হলেও উজানের ঢলে নষ্ট হয়েছে রাস্তাঘাটসহ সদ্য রোপনকৃত আমন ধান ও ফসলি জমি। এ ছাড়া ২৫ আগস্ট বুধবার রাতে সদ্য মেরামতকৃত স্থান সদর ইউনিয়নের জয়পুরে আবারও ভেঙে ৭টি গ্রাম গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়ে ক্ষতি হয়েছে ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের জয়পুর, ঘনিয়া মোড়া, পূর্ব ঘনিয়া মোড়া, কিসমত ঘনিয়া মোড়া, উত্তর দৌলতপুর, বৈরাগপুর ও জগৎপুর এবং পরশুরাম উপজেলার সাতকুচিয়া ও চিথলিয়া এলাকা। তলিয়ে যায় ঘর-বাড়ি ও মাছের ঘের। শুক্রবার বিকাল থেকে বন্যাকবলিত এলাকার বাড়ি-ঘর থেকে বানের পানি নামতে শুরু করেছে। তবে, এখনো অধিকাংশ এলাকায় পানি আটকে আছে। গ্রামের রাস্তা-ঘাট ও ফসলের খেত তলিয়ে আছে পানির নিচে। এসব এলাকার মানুষ রান্না করতে না পেরে শুকনো খাবার চিড়া, মুড়ি, গুড়, চিনি ও পাউরুটি খেয়ে অতিবাহিত করেছে ৪ দিন ধরে। তবে দুর্ভোগ কমেনি এখনো পানিবন্দী মানুষের।
স্থানীয় বাসিন্দারা মিজানুর রহমান জানান,পানি নামলেও সেসব স্থানে এখনও রয়েছে কাদা-পানির দুর্ভোগ। ফসলি জমি ও মাছের ঘের তলিয়ে বড় ধরনের লোকসানে পড়েছে চাষিরা। টেকসই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অভাবে প্রতিবছর এই এলাকার মানুষের অনেকের দিন ধরে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
কৃষক সোহেল জানান, এবার বন্যায় সবজি ও আমনের কিছু বীজতলা পানিতে তলিয়ে যায় তার। চলাচলের জন্য গ্রামের সড়ক ভেঙ্গে কাদা-পানির দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। তিনি বার বার একই সমস্যার জন্য টেকসই বেড়িবাঁধের জন্য দাবী করেছেন।
কয়েকদিন ধরে কষ্ট আছেন উল্লেখ করে গৃহিণী সুলতানা নাজনীন জানান, চলতি বন্যার পানি নেমে গেলেও সন্তানদের নিয়ে দুর্ভোগ বেড়েছে তার। বন্যায় পারিন কল ডুবে যাওয়ায় বাইরে থেকে কাদা-পানিতে আধাকিলোমিটার পায়ে হেটে বিশুদ্ধ পানি আনতে হচ্ছে তাকে।
মৎস্যচাষী আব্দুল জলিল জানান, পুকুরের চাষকৃত ২০ লাখ টাকার মাছ বন্যায় ভেসে গেছে। এখন চিন্তা তার ঋনের টাকার।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, ১৫০ হেক্টর আমান আবাদি জমি এবং ৫ হেক্টর সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়েগেছে। তবে এখনো পানির নিছে অকে কৃষকের ফসলি জমি রয়েছে। তবে তিনি ক্ষতিগ্রস্থতের সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় তালিকার কাজ চলছে। তবে সরকারি সহায়তা পেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরাই পাবেন।
ফুলগাজী সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা উজ্জ্বল বণিক জানান, চলতি বন্যায় ২৩ হেক্টর জমির ১৩৮ টি
মাছের ঘেরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৮ লাখ টাকারও বেশি হয়েছে।ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের তালিকা করা হয়েছে।তাদেরকে সহযোগিতার জন্য সরকারিভাবে কোন নির্দেশনা আসে নাই। এতে তা গনমাধ্যম কর্মীদের উপস্তিতিতে দেওয়া হবে।
ফুলগাজী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌসি বেগম জানান, ১৫০ হেক্টর ধান, মাছের ঘের ২০/২৫ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। এত মধ্যে ৩০০ পেক্টের শুকনো খাবার ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাঁধ মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে বাঁধ নির্মাণসহ প্রয়োজনী ব্যবস্থার করা আসস্ত করেছেন তিনি।