গত বছর করোনা মহামারীর শুরু থেকেই বাজারে গ্রাফিক্স কার্ডের মূল্য আকাশচুম্বী। যার কারণ হিসেবে বলা যায় বাজারে গ্রাফিক্স কার্ডের স্বল্পতার বিপরীতে গ্রাহকদের অধিক চাহিদা। আসলেই কি তাই? বাজার ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি সিরিজের কার্ডের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুন, যেখানে একটি ১০৫০টিআই গ্রাফিক্স কার্ড বিক্রি হতো ১৩-১৫ হাজারে, তা এখন বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২৫-৩০ হাজার, যেখানে কিছুদিন আগে একটি ১৬৬০ সিরিজের কার্ড বিক্রি হতো ২০-২২ হাজারে তা এখন ৫৫-৬০ হাজারে বিক্রয় হচ্ছে।
এই মূল্য বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে বলা যায় চীনা নির্ভর বাজারের জন্য। কিন্তু এই বছর চীনা বাজার স্থিতিশীল হলেও গ্রাফিক্স কার্ডের বাজার মূল্য কমেনি। যার একটি কারণ হলো ক্রিপ্টোকারেন্সি বা বৈদ্যুতিক মুদ্রা যা বিটকয়েন নামে পরিচিত। এই বিটকয়েন উত্তোলনের জন্য প্রয়োজন গ্রাফিক্স কার্ড ও বৃহৎ পরিমানের বৈদ্যুতিক শক্তি। গত বছর টেসলা ও স্পেস এক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলোন মাস্ক ঘোষণা দেয় বিটকয়েন দিয়ে এখন থেকে টেসলার গাড়ি ও অন্যান সামগ্রী কেনা যাবে। এই ঘোষণার পর থেকে বিটকয়েনের মূল্য রাতারাতি বেড়ে যায়। তাই বাজারে গ্রাফিক্স কার্ডের স্বল্পতা দেখা যায়। যদিও তিনি বছরের শুরুতে এই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। তারপরেই বিটকনের মূল্য রাতারাতি ৪০ শতাংশ কমে যায়। তারপরও গ্রাফিক্স কার্ডের মূল্য খুবই সামান্য পরিমানে কমেছে। যার আরেকটা কারণ হলো স্ক্যালপারদের উৎপাত। স্ক্যালপাররা সাধারণত বাজারে নতুন কোনো সিরিজের কার্ডের চালান আসলে তা ওয়েব-বট বা স্বয়ংক্রিয় প্রোগ্রামের মাধ্যমে অতিরিক্ত পরিমাণ মজুদ করে বাজারে কৃত্তিম সংকট তৈরী করে। পরবর্তীতে পণ্যের আসল মূল্য থেকে কয়েক গুন অধিক মূল্যে বিক্রি করে।
সম্প্রতি টেক জায়ান্ট এনভিডিয়া ক্রিপ্টোকারেন্সির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ঘোষণা দিয়েছে তাদের ৩০ সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ড দিয়ে খুবই অল্প পরিমানে ক্রিপ্টোকারেন্সি উত্তোলন করা যাবে। প্রযুক্তিবিদরা আশা করছেন এতে করে আগামী ৩-৪ মাসের ভিতর গ্রাফিক্স কার্ডের মূল্য সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে চলে আসবে।