আট মাসেও শেষ হয়নি স্বাস্থ্য অধিদফতরের আলোচিত গাড়িচালক আব্দুল মালেক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলার তদন্ত। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে কমিশন।
মামলার এজাহারে মালেকের বিরুদ্ধে ৯৩ লাখ ৫৩ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং এক কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসহ মোট দুই কোটি ৪৩ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৮ টাকার সম্পদের তথ্য উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে বৈধ সম্পদ পাওয়া যায় মাত্র ৬০ লাখ ৯ হাজার টাকার।
অপর মামলায় আব্দুল মালেক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগমকে আসামি করা হয়। এ মামলায় নার্গিস বেগমের দুই কোটি ১২ লাখ ৩৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য উল্লেখ করা হয়, যার বিপরীতে বৈধ উৎসে পাওয়া যায় এক কোটি এক লাখ ৪৩ হাজার ৩৮২ টাকা। বাকি এক কোটি ১০ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে অর্জিত। তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২৭ (১) ও ২৬ (২) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
উল্লেখ্য,আবদুল মালেক দম্পতির বিরুদ্ধে কমিশনের দায়ের করা মামলায় সোয়া তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছিল। তদন্তে পাঁচ কোটি টাকার বেশি মূল্যমানের অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। তাদের ৭তলা বাড়ি, বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, পাজেরো জিপ ও গরুর খামারের সন্ধান পেয়েছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ।
নথিপত্রে পাঁচ কোটি টাকার বেশি সম্পদের কথা বলা হলেও বাস্তবে ওই সম্পদের বাজারমূল্য কয়েকগুণ বেশি হবে বলে জানা গেছে। যদিও আব্দুল মালেক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগমের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মামলায় সোয়া তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছিল। অর্থাৎ অভিযোগে যে পরিমাণ সম্পদের কথা বলা হয়েছিল, তদন্তে এর চেয়েও বেশি সম্পদ পাওয়া গেছে।
তবে দুদকের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গাড়িচালক আব্দুল মালেক স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মচারী ইউনিয়নের স্বঘোষিত সভাপতি হয়ে ২০১০ সালে ৫০০ কর্মচারী নিয়োগ-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এসব টাকা দিয়েই সম্পদের পাহাড় গড়েন মালেক।
উত্তরার কামারপাড়ায় দুটি ৭তলা বাড়িসহ নামে-বেনামে অঢেল সম্পদ গড়েছেন মালেক ও তার স্ত্রী, এমন অভিযোগে দুদক অনুসন্ধানে নামে। অনুসন্ধানে এ মালেক-দম্পতির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে।
দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা ও সহকারী পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করবেন বলে জানা গেছে। এরপর কমিশনের অনুমোদনক্রমে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।
এ বিষয়ে সংস্থাটির জনসংযোগ দফতরও বলেন, চার্জশিট অনুমোদনের আগে কোনো কিছু বলা যাবে না।দুদকের আইন শাখার এক কর্মকর্তা বলেন,গোপনীয়তা রক্ষায় এখন কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এই গাড়িচালকের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে কমিশন কঠোর অবস্থানে আছে।