খুলনার পাইকগাছায় কৃষক অখিল মন্ডলের ক্ষেতে ৭ফুট লম্বা চিচিঙ্গা হয়েছে। বাড়ির উঠানে মাচা বা বানে লম্বা চিচিঙ্গা ঝুঁলছে। অনেকে বিদেশী জাতের এই লম্বা চিচিঙ্গা দেখতে বাড়িতে ভীড় করছে। বৈরি আবহাওয়া ও অতিবৃষ্টির মধ্যে বিদেশী জাতের লম্বা লম্বা চিচিঙ্গা উৎপাদন করে কৃষক অখিল সফলতা অর্জন করেছেন। গত বছর উপজেলায় কৃষক নিলু ভারতের অন্ধপ্রদেশ থেকে এ কুশির বীজ সংগ্রহ করে এনেছে। কুড়িটি বীজ এনেছিলো, সে নিজে লাগিয়েছিল এবং পাশের কৃষকদের বীজ দিয়েছেন। সরল গ্রামের কৃষক অখিল জানান, বাড়ির উঠানে চারটি বীজ বপন করেন। তিন-চার ফুট গাছ বড় হওয়ার পর গাছ অতি বৃষ্টির কারণে মরে যায়। একটি গাছ বাচিয়ে রাখতে পেরেছি। সেই গাছে কুশি ধরছে। দুটি বড় হয়েছে। আর ছোট ছোট অনেকগুলি ধরেছে, ফুলও আছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। গাছ টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খেতে হয়েছে। সে সময় প্রায় চার ফুট লম্বা একটি কুশি নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষেতের মাচায় বড়দুটি কুশি প্রায় সাত ও সাড়ে ছয় ফুট লম্বা হয়েছে। একই গ্রামের কৃষক অনুকূল ব্যাণার্জী জানান, এ বছর তার ক্ষেতের চিচিঙ্গা গাছ ৪-৫ ফুট লম্ব হলে একটানা অতি বৃষ্টিতে গাছগুলো মারা গেছে। পুনরায় তিনি চিচিঙ্গার বীজ বপন করেছেন। যার উচ্চতা ২-৩ ফুট হয়েছে। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরণের চিচিঙ্গা দেখা যায়। এগুলো হল ঝুম লং, সাদা সাভারী, কইডা বা বন চিচিঙ্গা। এছাড়াও বেশকিছু হাইব্রিড জাতের চিচিঙ্গাও পাওয়া যাচ্ছে। তারমধ্যে রয়েছে তিস্তা, তুরাগ, সুরমা, রূপসা, ঢাকা গ্রিণ, মধুমতি, বর্ণালী, চিত্রা, রোহিনী ইত্যাদি। এছাড়াও আমাদের দেশে এখন অনেক বিদেশী জাতের চিচিঙ্গা ও চাষ করা হচ্ছে। জানুয়ারি মাস বা ফেব্রুয়ারি মাস থেকে চিচিঙ্গা চাষের প্রস্তুতি নেওয়া যায়। যেসব জমি উঁচু ও বৃষ্টির পানি বদ্ধ থাকে না এমন জমিতে চিচিঙ্গা ভালো হয়। চিচিংগা বা কুশি হচ্ছে ঝিঙের মতো লম্বা বা কখন সাপের মতো পেচানো দেখতে হয়। এটা হালকা সবুজ ও গাঢ় সবুজ সাদা ডোরা কাটা উভয় ধরনের হয়ে থাকে। লম্বা ৩০-৪০ সে. মি. বা ১৮-২৫ ইঞ্চি হয়। কুশি গ্রীষ্মকালীন সবজি। বাংলাদেশের সব এলাকায় এ সবজির চাষ হয়। এলাকাভিত্তিক চিচিংগা, কুশি ও কাইডা নামে পরিচিত। এই এলাকায় কুশি নামে সবজিটি পরিচিত। কুশি শতভাগ ভক্ষণযোগ্য অংশে ৯৫ ভাগ পানি থাকে। এর অনেক ঔষধী গুণ আছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবদি মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, এটি ভারতের উন্নাত জাতের চিচিঙ্গা। বীজ উৎপাদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কৃষককে। চিচিঙ্গার এই জাতটি সংরক্ষণে উদ্যেগ নিলে দেশে চাষ করা সম্ভব এবং কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।