নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার ৩০টি বিদ্যালয়ের অন্তত ১০হাজার শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন ধরে বিশুদ্ধ খাবার পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি বিদ্যালয়ে নলকূপ থাকলেও কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় ওইসব নলকূপ দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাছাড়া ইতোপূর্বে বেশকিছু নলকূপের যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে।
উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কলমাকান্দা উপজেলায় ১৭২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তারমধ্যে চামারজানী, সৌলজান, পরিলাকুল, বিষমপুর, বেনুয়া পূর্বপাড়া, হাসানোয়াগাও, শিবপুর, চৈতননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৩০টি বিদ্যালয়ের অন্তত ১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য নেই কোন সুপেয় পানির ব্যবস্থা। ফলে শিক্ষার্থীদেরকে বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজন মেটাতে বিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে পানি পান করতে হচ্ছে। আবার কোন কোন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জন্য কলসী ভরে পানি সংগ্রহ করে রাখছে।
এবিষয়ে চৈতননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবীর বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সুপারিশসহ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কাছে তিন বার আবেদন করেছি। কিন্তু এই পর্যন্ত প্রায় ২শত শিক্ষার্থীর জন্য একটি টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করতে পারিনি। শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ের পাশের বাড়ি থেকে বিশুদ্ধ খাবার পানি পান করছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল হোসেন বলেন, এবিষয়ে গত বুধবার স্থানীয় এমপি মানু মজুমদার মহোদয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, যেসব বিদ্যালয়ে টিউবওয়েল নেই সেসব বিদ্যালয়ের তালিকা দিতে। একসঙ্গে তিনি সব শিক্ষার্থীদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করে দিবেন। কিন্তু উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী বলছেন তিনি ওইসব বিদ্যালয়ে ওয়াসব্লকের ব্যবস্থা করে দেবেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, যেসব বিদ্যালয়ে দুই তলা বিল্ডিং আছে সেসব বিদ্যালয়ে ওয়াসব্লকের মাধ্যমে পানির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যেসব বিদ্যালয়ে ২তলা বিল্ডিং নেই সেসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিভাবে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করবে এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এলজিইডি ওইসব বিদ্যালয়ে যদি মাস্টার প্লান করে দেন তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই ওইসব বিদ্যালয়ে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।
কলমাকান্দা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা খাতুনের মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।