লাকসাম উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক এমপি ও লাকসাম বাজার বনিক সমিতির সাবেক সভাপতি আলহাজ¦ মোঃ সাইফুল ইসলাম হিরু ও লাকসাম পৌরসভা বিএনপির সাবেক সভাপতি লাকসাম বাজার কাপড় ও গার্মেন্টস ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি আলহাজ¦ মোঃ হুমায়ন কবির পারভেজের নিখোঁজের রহস্য ৮ বছরেও উদঘাটন হয়নি। বিএনপি নেতাকর্মী ও পরিবারের দাবী গত ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর বুধবার রাত ১০টায় লাকসামের পাশ্ববর্তী সদর দক্ষিণ উপজেলার আলীশ্বর নামক স্থান থেকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকা যাবার পথে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকদারী লোকজন তাদের আটক করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে বিএনপির এ শীর্ষ দু’নেতার সন্ধানের দাবীতে নিখোঁজের পর বিভিন্ন সময়ে লাকসাম মনোহরগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাকর্মীরা হরতাল পালন, বিক্ষোভ, মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। কিন্তু তাদের আটকের বিষয়ে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও ডিবিসহ কোন সংস্থাই কিছুই জানেনা এবং আটকের বিষয়টি স্বীকার করেনি। এ নিয়ে লাকসাম বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ, আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। বিএনপির নেতারা জানান গত ২৭ নভেম্বর বুধবার রাত সাড়ে ১০ টায় ঢাকা লাকসাম আঞ্চলিক মহাসড়কের লাকসামের পাশ্বপর্তী সদর দক্ষিণ উপজেলার আলিশ্বর নামক স্থান থেকে লাকসাম ফেয়ার হেল্থ হসপিটালের অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকা যাবার পথে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকদারী লোকজন তাদের আটক করে নিয়ে যায়। এ সময় এম্বুলেন্সে লাকসাম উপজেলা সাবেক বিএনপি সভাপতি সাবেক এমপি আলহাজ¦ সাইফুল ইসলাম হিরু ও লাকসাম পৌরসভা বিএনপি সভাপতি আলহাজ¦ হুমায়ন কবির পারভেজ ও পৌরসভা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন ছিলেন। পরে অ্যাম্বুলেন্স চালক সাদেক তার গাড়ি নিয়ে লাকসাম ফিরে আসে। চালক সাদেকের বর্ননামতে ওই ৩ নেতাকে যারা নিয়ে গেছে তারা ছিল সাদা পোশাকদারী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোক। পরে সদর দক্ষিন উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে অন্য একটি গাড়িতে পৌরসভা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিনকে তুলে দিয়ে বিএনপির দুই শীর্ষ নেতা হিরু ও হুমায়নকে নিয়ে চলে যায়। রাতেই লাকসাম থানায় জসিমসহ আরো ১০ জনকে হস্তান্তর করে বলে জানা গেছে। এ পর্যন্ত পুলিশ র্যাব বিজিবি ডিবিসহ বিভিন্ন স্থানে স্বজনেরা খোঁজ খবর নিয়েও লাকসাম উপজেলা ও পৌর বিএনপির সভাপতির সন্ধ্যান পাওয়া যায়নি। গত ৮ বছর ধরে নিখোঁজ তারা। তাদের পরিবার পরিজন স্বজন বা বর্তমান নেতৃত্বাধীন বিএনপির নেতাকর্মীরা এ নিয়ে উৎকন্ঠিত ও চিন্তাগ্রস্ত। বিশেষ করে তাদের স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাদের ঘুম নেই। লাকসাম উপজেলা বিএনপি সভাপতি সাবেক এমপি আলহাজ¦ সাইফুল ইসলাম হিরুর ছোট ভাই বিশিষ্ট শিল্পপতি মো: তাজুল ইসলাম বলেন- আমার বড় ভাই এমনকি অপরাধ করল তাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়েছে এবং গত ৮ বছরেও সন্ধান মেলেনি। বড় ভাইকে ছাড়া আমরা কিছুতেই থাকতে পারছি না। তিনি তার বড় ভাইয়ের সন্ধান ও নি:স্বর্ত্ব মুক্তি দাবি করেন। অপরদিকে লাকসাম পৌরসভা সাবেক বিএনপি সভাপতি আলহাজ¦ হুমায়ন কবির পারভেজের ছোট ভাই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো: গোলাম ফারুক বলেন- দীর্ঘ ৮ বছর ধরে আমার বড় ভাই নিখোঁজ। ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর বুধবার রাত ১০টায় লাকসামের পাশ্ববর্তী সদর দক্ষিণ উপজেলার হরিশ্চর নামক স্থান থেকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকা যাবার পথে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকদারী লোকজন তাদের আটক করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তারা নিখোঁজ। আমার বড় ভাই নির্দোষ। তিনি সব সময় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের বিশ্বাসী ছিলেন এবং মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করেছেন। কোন অপরাধে আমার বড় ভাইকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়েছে এবং আজও উদ্ধার হয়নি, আমি জানতে চাই? লাকসামের শীর্ষ বিএনপি দুই নেতার দীর্ঘ ৮ বছরেও নিখোঁজের রহস্য উদঘাটন হয়নি। বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা কোথায় আছে, কেমন আছে কেউ জানে না। তাদেরকে কী হত্যা করা হয়েছে? এবং কারা করেছে? তার রহস্য এখনো উদঘাটন হয়নি। শীর্ষ দুই নেতাকে ফিরে পাওয়ার জন্য প্রতি বছর ২৭ নভেম্বর মিলাদ ও দোয়া করা হয়।