করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক ধ্বসের মুখে বাংলাদেশ ততটা পড়েনি; যতটা পড়ার কথা ছিলো। কেননা, কভিড-১৯ বা করোনার ছোবলে নীল হয়ে যাওয়া পৃথিবীর মধ্য ও নিন্ম আয়ের অনেক দেশে যখন নির্মম মৃত্যু-ক্ষুধা আর দারিদ্র এসে ভর করেছে; তখন বাংলাদেশে নিজের কথা না ভেবে বাংলাদেশে থাকা পরিবার-স্বজন-প্রিয়জনদের জন্য না খেয়ে, অর্ধ হারে থেকে কষ্টার্জিতি অর্থ পাঠিয়েছেন আমাদের প্রিয় প্রবাসীরা। একদিকে যেমন রেমিটেন্স ব্যাপকভাবে বাড়ছে; তেমনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ছাত্র-যুব-জনতার অধিকার হরণের চেষ্টা। বিশেষ করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, বাড়ছে অন্যান্য প্রায় সকল প্রয়োজনীয় বস্তুর দাম। কিন্তু কেন? কারণ কি? বিশ^জুড়ে কি এভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে?
না! একদমই না। বর্তমান বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির মূল কারণ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সংসদীয় কমিটি, সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সীমাহীন দুর্নীতি আর অদক্ষতা-অযোগ্যতার জন্য। যে কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গর্বের সাথে বিভিন্ন উন্নয়নের কথা বললেও, আসেনি নিন্ম ও মধ্যবিত্তদের পাশাপাশি ভাবসমান মানুষদের জীবনে সামাণ্য উত্তরণ। এমতবস্থায় আমার কাছে কেবলই মনে হচ্ছে যে, জাঁতি এখন যে দান অনুদান বা রেমিটেন্স-এর উপর ভর করে বড় বড় কথা বলছে, সেই ৩ টি স্তরের রেমিটেন্স স্তরটি ভেঙ্গে পড়তে পারে যে কোন সময়। এটি কতটা টেকসই অর্থনৈতিক ভিত্তি, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। একথাও সত্য যে, মানুষ নতুন করে তেমন একটা বিদেশে যাচ্ছে না। ফলে টাকা কেন এবং কীভাবে আসছে, তা প্রশ্ন রয়েছে। দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা আবার দেশে আসছে কিনা এ প্রশ্ন রয়েছে। ফলে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য এবং টাকার মান ঠিক রাখাও বড় চ্যালেঞ্জ। সাম্প্রতিক সময়ে খাদ্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে সকল মহলকে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে চালের দাম বৃদ্ধির মূল্যস্ফীতির ওপর গৃষ্টি করে কিনা সেটি বিবেচনায় নিতে হবে। কারণ একদিকে অর্থনীতি তেজি নয়, অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি বাড়লে দু’দিক থেকে সমস্যা তৈরি করবে। পাশাপাশি শিক্ষায় জোর দিতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ খাত অনেক পিছিয়ে গেছে।
করোনায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ৮ অক্টোবরও ভিন্নধর্মী কর্মসূচি ‘তরকারি মিছিল’ করেছেন নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবির রাজনীতিকগন। কিন্তু বাকি দলগুলো কি করছে? নিবন্ধিত ৪০ ও অনিবন্ধিত ৭৫ টি রাজনৈতিক দল কেবল ক্ষমতায় আসার আর থাকার চেষ্টা করছে। কিন্তু নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবি আত্মপ্রকাশের পর থেকে দ্রব্যমূল্য কমানোর দাবিতে কাফন মিছিল, চুলা মিছিল, ঝাড়- মিছিল, ভূখা মিছিল, প্রতিকি অনশনসহ শতাধিক কর্মসূচি পালনের ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ তরকারি মিছিলের মধ্য দিয়ে দেশবাসীকে ম্যাসেজ দিয়েছে যে, জাতির এখন জেগে ওঠার সময়।
করোনায় আমরা প্রায় সকলেই শিখেছি- শুধু প্রথাগত দুস্থ্য মানুষ নয়, নিম্ন মধ্যবিত্তরাও বিপন্ন বোধ করেন। সেক্ষেত্রে সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টি ভাবতে হবে। সর্বশেষ বিষয় হল, করোনার টিকায় জোর দিতে হবে। ২০২০-২১ যদি করোনার বছর হয়, তবে ২০২১-২২ হওয়া উচিত টিকার বছর। এ ক্ষেত্রে টিকা সংগ্রহ, রক্ষণাবেক্ষণ, ব্যবস্থাপনা এবং বিতরণ সঠিকভাবে করতে হবে। একই সাথে ভেঙ্গে পড়া স্বাস্থ্যখাতকে যতই কষ্ট হোক, সাজাতে হবে নীতির সাথে-প্রীতির সাথে। একই সাথে মনে রাখতে হবে- দেশে নতুন কর্মসংস্থান তৈরির জন্য শিল্পায়নে বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর বিনিয়োগে পুঁজি সংগ্রহের দুটি খাত হল ব্যাংক ও শেয়ারবাজার। কিন্তু দুটি খাতই নাজুক অবস্থায়। এ ছাড়া একটি দেশে বিনিয়োগ বাড়লে চারটি নির্দেশক দিয়ে বোঝা যায়। প্রথমত, বিডায় নিবন্ধন বাড়বে। দ্বিতীয়ত, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়বে। একইভাবে বাড়বে মূলধনী যন্ত্রপাতি ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানি। বিডার তথ্য অনুসারে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় জুলাই-সেপ্টেম্বরে স্থানীয় বিনিয়োগ ৬১ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগ ৯৩ শতাংশ কমেছে। অবশ্য চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে উপরের আশঙ্কার কথা উল্লেখ থাকলেও এতে বেশকিছু সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনার চলতি হিসাবে ঘাটতির পরিমাণ কমতে পারে, বাড়তে পারে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ফলে আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা আরও বেড়ে যাবে। করোনা-পরবর্তী সময়ে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ফলে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতেও।
করোনার কারণে দেশের অর্থনীতি যেসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে, সেগুলো থেকে উত্তরণের উপায় কী? মুদ্রানীতিতেই বলা হয়েছে, অর্থনীতির চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগাতে হবে। এজন্য অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের পরিচালক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে দক্ষতার সঙ্গে এগোতে হবে। বাড়াতে হবে সব পক্ষের সক্ষমতা। আমরাও মনে করি, অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সক্ষমতা অর্জনের বিকল্প নেই। দ্বিতীয়ত, দেশে চলমান টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করে দ্রুতই এর আওতা বাড়াতে হবে। টিকার সঙ্গে অর্থনীতির চাকার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। উৎপাদনমুখী শিল্প-কারখানাসহ সব ধরনের কারখানা খুলে দিয়ে সেগুলোর স্বাভাবিক ও বিরতিহীন কর্মকা- নিশ্চিত করতে হলে করোনা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে নামাতে হবে। আর সেটা করতে হলে প্রয়োজন অধিকসংখ্যক মানুষকে টিকাদান। বাংলাদেশ রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদীও প্রায় একই কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, করোনা নিয়ন্ত্রণের উপায় বের করতে হবে। লকডাউন দিয়ে শিল্প-কারখানা বন্ধ রাখলে নতুন বিনিয়োগ তো হবেই না, যেগুলো রয়েছে সেগুলোও ধরে রাখা যাবে না। তিনি আরও বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট নিরসনে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও গার্মেন্টসহ বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখার ফলে কনটেইনার খালাস করতে কেউ যেতে পারেনি। এর ফলে আবার জট লেগে গেছে। এ ধরনের সমন্বয়হীনতা দূর করতে হবে।
দেশের অর্থনীতির সামনে এক কঠিন বাস্তবতা অপেক্ষা করছে বলা যায়। অবশ্য আইএমএফ আভাস দিয়েছে, ২০২২ সালের জুনের মধ্যে বেশির ভাগ দেশের বেশির ভাগ মানুষ টিকার আওতায় আসবে, ফলে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। তাই যদি হয়, তাহলে বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে তাল রেখে আমাদের অর্থনীতিরও দুর্দিন কাটবে। আমরা আশা করব, আইএমএফের এই পূর্বাভাস বাস্তব রূপ লাভ করবে। অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠার সঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণের সম্পর্কটিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে সব দেশ। আমাদেরও তা-ই করতে হবে। বিশেষত করোনায় ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশের যেমন প্রয়োজন, তেমন প্রয়োজন নীতি আদর্শ সম্ভাবনায় অগ্রসর হওয়া। আমি মনে করি রাষ্ট্রিয় আর্থিক সহায়তার মধ্য দিয়ে জীবন-জীবিকার তাগিদে অর্থনীতির চাকা খুলে দিতেই হবে। তবে তা করতে হবে সাবধানে এবং চলাচলের সব পর্যায়ে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে। কাজটি জটিল, তবে অসম্ভব নয়। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে যেতে যেতে আমাদের এখনই পরিকল্পনা করে অর্থনৈতিক বিকাশের লক্ষ্যে সব রকম অর্থনৈতিক অপরাধ-দুর্নীতি থেকে বের করে আনতে হবে বাংলাদেশের বর্তমানকে।
শুধু ঢাকা শহরে ১ দশমিক ৮ কোটি লোক প্রতিদিন কাজ ও বসবাস করে। ঢাকার খালি জায়গা বাদ দিলে এই ১ দশমিক ৮ কোটি লোক সর্বোচ্চ ১৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় অবস্থান করে। অর্থাৎ প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রতিদিন অবস্থান করে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ। এভাবে ভেবে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক বিকাশে সর্বোচ্চ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এগিয়ে চলার চেষ্টা শুরু হয়। অর্থনীতির বিকাশে সরকারি সব অফিসে থাকা প্রয়োজন অনলাইন বা ফোনে সেবার ব্যবস্থা। প্রতিটি সেবার জন্য চালু হবে ই-কাউন্টার। আমি ই-কাউন্টার বলতে কেবল শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর জন্য বলছি না, থাকবে কল রেকর্ডিং ব্যবস্থা। ই-কাউন্টারের পেছনে থাকবে একটি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি যেন সেবা কাউন্টারে সেবাটির সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারবে যে কেউ। সব লেনদেন হবে বিকাশ বা সমজাতীয় ব্যবস্থায়। ক্যাশ থাকবেই না। প্রয়োজনে ব্লকচেইনের ভিত্তিতে ই-মানি চালু করার কথা চিন্তা করা উচিত, যা চীন এরইমধ্যে চালু করেছে। তাতে দুর্নীতি কমবে। প্রতিটি সরকারি সেবা সংস্থায় চালু থাকবে ইলেকট্রনিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি। তাতে একদিকে কার কাছে কোন কাজ কতদিন পড়ে আছে, তার ওপর নজর রাখা যাবে, তেমনি কে দিনে কতগুলো কাজ করেছে, তাও জানা যাবে। প্রধানমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন সবাই বুঝতে পারবেন কে কাজ করছেন আর কে করছেন ফটোসেশন। এসব প্রস্তুতির জন্য আইসিটি মন্ত্রণালয় তৈরি করবে প্রমিত রীতি ও নীতি। এখনই দায়িত্ব দিতে হবে। ব্লকচেইন কৌশল ব্যবহার করে কাজ করলে নজরদারি করাও হবে অতিসহজ। আর এতে ইলেকট্রনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় একা কেউ কোনো রেকর্ড পরিবর্তন করতে পারবে না। নজরদারির সব ব্যবস্থা হবে ব্লক চেইনভিত্তিক। তাতে কোনো সংস্থা সহজে দুর্নীতির আশ্রয় নিতে পারবে না। এভাবে অর্থনীতিবিদদের ভাবনা বাস্তবায়ন হলেই করোনায় অর্থনীতির বিকাশ সম্ভব হবে বলে ধারণা করছেন নীতি নির্ধারকগণ।
দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান করোনা সংকট দেশের অর্থনীতিতে যে প্রভাব ফেলেছে, তা উদ্বেগজনক বলে বিশ^ গণমাধ্যম প্রকাশ করেছে। করোনা মানুষের স্বাভাবিক কর্মকা- ও গতিপ্রবাহই শুধু আটকে দেয়নি, ক্ষতিগ্রস্ত করেছে দেশের অর্থনীতিকেও। বাধাগ্রস্ত করেছে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের সামগ্রিক কার্যক্রম। অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা সংক্রমণের প্রভাবে চলতি অর্থবছরেই বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে দেশের অর্থনীতিকে। এই অর্থবছরে সরবরাহ চেইনের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়ে বেড়ে যেতে পারে বিভিন্ন পণ্যের দাম। প্রকৃতপক্ষে ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। দেশে টাকার প্রবাহ ও পণ্যের দাম বাড়ার কারণে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যেতে পারে। পাশাপাশি বাড়তে পারে দেশে-বিদেশে ঋণের সুদের হার, আর তাই স্বাভাবিক কারণেই বৃদ্ধি পাবে বৈদেশিক দেনার পরিমাণ। এ ছাড়া কমতে পারে আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধির হার। সকল মিলিয়ে আলোর কথা, ভালোর কথা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় এখন।
করোনার নেতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে দীর্ঘদিন থাকবে। এটি বিবেচনায় রেখেই পরিকল্পনা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সবার আগে স্বাস্থ্যসেবা এবং করোনার ভ্যাকসিনে জোর দিতে হবে। তিনি বলেন, নতুন বছরে অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ মূলত ৪টি। ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ সচল করাটাও খুব প্রয়োজন। করোনার আগে থেকেই ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ স্থবির অবস্থায় ছিল। আর করোনার সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের সঙ্গে অপ্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর যুব কর্মসংস্থানের বিনিয়োগের কোনো বিকল্প নেই। ব্যাংকিং খাত দুর্বল। তবে বর্তমানে সেখানে তারল্য আছে। কিন্তু বেসরকারি খাত এখন ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে না। বেসরকারি বিনিয়োগের সঙ্গে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) স¤পৃক্ত। এ ক্ষেত্রে এফডিআই নিয়ে যে পরিমাণ প্রচার হয়, সে হারে বিনিয়োগ হয় না। চ্যালেঞ্জ বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করা। সাম্প্রতিক সময়ে রফতানি কিছুটা বাড়ছে। কিন্তু পুরোটা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। ফলে রফতানি বাড়ানো এবং রেমিটেন্স অব্যাহত রাখা অন্যতম দায়িত্ব। এটা কিন্তু সত্য যে, জাতির সামনে দিয়ে ঘটে যাওয়া করোনার ধাক্কায় নড়বড়ে দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা কারো নেই; কেবল আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার চিন্তা তাদের মাথায়; যারা দ্রব্যমূল্য কমিয়ে জনগনকে কিছুটা হলেও ভালো রাখতে পারতেন। এইসব অথর্ব-স্বার্থপর রাজনীতিক-জনপ্রতিনিধি আর আমলাদের কারণেই দ্রব্যমূল্য কমানোর চেষ্টা নেই কারোই। নতুন করে ১০ শতাংশের বেশি মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে চলে এসেছে। অর্থনীতির মৌলিক সূচকগুলোর মধ্যে রেমিটেন্স ছাড়া সব নিম্নমুখী। এ অবস্থায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ঝুঁকি নিয়ে শুরু হচ্ছে নতুন বছর। এত কিছুর মধ্যেও আশার আলো হল- যত বেশি খারাপের আশঙ্কা করা হয়েছিল, অর্থনীতি তারচেয়েও দুর্বল পর্যায়ে অবস্থান করছে। চাই উত্তরণ-নীতি-আদর্শ-সম্ভাবনার হাত ধরে।
অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই। কেবল লোভ মোহহীন নীতি আদর্শের রাস্তায় অগ্রসর হতে হবে বাংলাদেশের রাজনীতির রাঘব বোয়াল ও সচিবালয়ের রাঘব বোয়ালদেরকে। তারা চাইলেই হতে পারে কার্যকর মনিটরিং টিম, থাকতে পারে প্রতিটি বাজারে দ্রব্যমূল্যর তালিকা। যেখানে চালের দাম ৩০ টাকা, ভোজ্য তেলের দাম ১০০ টাকা আর পেয়াজের দাম থাকবে ৩০ টাকা কেজী। সেই সাথে অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যও সরকার রাষ্ট্রিয়ভাবে ভর্তুতি দিয়ে হলেও রাখবে জনগনের সাধ্যের মধ্যে...
মোমিন মেহেদী : চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবি