ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল পৌরসভা গত ২০০৪ সালে স্থাপিত হয়। এরপর রাণীশংকৈল-পীরগঞ্জ মহাসড়ক ঘেঁষা পৌরশহরের চাদনী এলাকার মালিকানাধীন একটি বাড়ীর ৮টি রুম মাসিক ভাড়া নিয়ে পৌরসভার কাযর্ক্রম শুরু করা হয়। স্থাপিত হওয়ার পর থেকে সে বাড়ীতেই চলছে পৌরসভার কাযর্ক্রম। ভাড়া বাড়ীতে পৌরসভার কাযর্ক্রম চালানোর বয়স ১৭ বছর। বাড়ীটির প্রস্থ কম এবং দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় কক্ষগুলো ছাড়া এবং লোক চলাচল করার মত ফাঁকা ছাড়া আর তেমন কোন খালি জায়গা নেই।
ভাড়া বাড়ী থেকে পৌরসভার তিনজন প্রশাসক ও একজন রাজনৈতিক প্রশাসকের মাধ্যমে পৌরসভার বিভিন্ন কাযর্ক্রম পরিচালনা করা হয়। পরে ২০১১ সালে পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে বিএনপি সমর্থক স্বতন্ত্র র্প্রার্থী মোখলেসুর রহমান পৌরমেয়র নির্বাচিত হন। তিনিও সে ভাড়া বাড়ীতে থেকে পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজের পাশাপাশি জাপান আন্তজার্তিক সংস্থা(জাইকা) উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেন। সে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ না হতেই তার ৫ বছরের মেয়াদ ফুরিয়ে যায় ।
২য় পৌরসভা নির্বাচনে ২০১৬ সালে আ’লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকে পৌর মেয়র আলমগীর সরকার নির্বাচিত হন। তার মেয়াদে তিনিও ভাড়া বাড়ী থেকে জাইকার কাযর্ক্রমের পাশাপাশি পৌরসভা গ থেকে খ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়। তবে তিনি তার মেয়াদে পৌরসভা ভবন করার লক্ষে পৌরসভার ৮নং ওর্য়াডের ভান্ডারা(শান্তিপুর) এলাকায় অবস্থিত হোসেনগ্াঁও ইউপি পুরাতুন কাউন্সিল কার্যালয়ের ৫০ শতক জমি কেনার লক্ষে ৩০ লাখ টাকা দাম নির্ধারণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৫ লাখ টাকা বায়না চুক্তি করে। রাণীশংকৈল পৌরসভার কার্যালয় হিসাবে সাইনবোড স্থাপন করেন। তবে বাকী ১৫ লাখ টাকা পরিশোধ করে জমি রেজিস্ট্রি নেওয়ার আগেই তার ৫ বছরের মেয়াদ ফুরিয়ে যায়। ৩য় পৌরসভা নির্বাচনে তিনি আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমানের নিকট পরাজিত হন। বর্তমান পৌর মেয়রেও সে ভাড়া বাড়ীতেই পৌরসভার কাযর্ক্রম চালাচ্ছেন। তবে তিনি পৌরসভার কাউন্সিলর ও মেয়র অন্যান্যা লোকদের সাথে সভা করার জন্য নিজ খরচে একটি সভাকক্ষ নির্মাণ করেন।
পৌরসভার প্রধান সহকারী ডালিম শেখ জানান, পৌরসভার ১০টি সেবামুলক দপ্তর এছাড়াও প্রকৌশলী, সচিব, পৌর মেয়রের আলাদা দপ্তরের প্রয়োজন। সব মিলে একটি পৌরসভায় প্রায় ১৫টি আলাদা কক্ষের প্রয়োজন। তবে বর্তমানে যে ভাড়া বাড়ীতে পৌরসভার কাযর্ক্রম চলছে তাতে রয়েছে সব মিলে ৮টি কক্ষ। তার মধ্যে পৌর মেয়র ও সচিবের কক্ষ একক দপ্তর থাকলেও অন্যান্য দপ্তরগুলো বাকী ৬টি রুমের মধ্যে সম্বন্বয় করে কাযর্ক্রম চলছে। এতে একজন সেবা প্রার্থীকে দপ্তরগুলোতে বসতে পযর্ন্ত দেওয়ার মত জায়গা নেই।
পৌর মেয়র হাজ্বী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বর্তমানে প্রতি মাসে সাত হাজার টাকা করে বাড়ী ভাড়া দিয়ে পৌরসভা চালাতে হচ্ছে। ভাড়া আরো বাড়তে পারে। তাছাড়া ছোট একটি বাড়ীতে এত বড় পৌরসভার কাযর্ক্রম চালানো মুশকিল। তবে পৌর ভবন করার জন্য আমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলেছি। তারা সবাই জমির কাগজ পত্র চায়। কিন্তু পৌরসভার এক শতক জমিও নেই। যে জমিটি পূর্বের মেয়র ১৫ লাখ টাকা বায়না চুক্তি করেছিল সে জমিটিও হোসেনগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাব-রেজিস্ট্রি করে দিচ্ছে না। তবে পৌরসভার ভবনের জন্য আমি একটি সুন্দর স্থান পছন্দ করেছিলাম। যেখানে আপাতত প্রশাসনের মাল্টা বাগান করা রয়েছে। তবে ইউএনও সে জায়গা দিতে নারাজ। জায়গা না পাওয়ায় এখন পযর্ন্ত পৌর ভবন করা সম্ভব হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন।