সীতাকুন্ডে বাংলাদেশ শিল্প ব্রেকার্স এ- রিসাইক্লিং অ্যাসোসিয়েশন জাহাজভাঙ্গা কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। আজ ১০ নভেম্বর থেকে সকল শিল্প ইয়ার্ডে জাহাজ কাটিং, স্ক্র্যাপ সরবরাহ সহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার টিমের অন্যায় ভাবে ইয়ার্ড মালিকদের হয়রানির অভিযোগে বিএসবিআরএ কতৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জানা যায়, গত ৯ অক্টোবর বিকেল ৩টায় কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার, চট্টগ্রাম এর ৩টি টীম বিনা নোটিশে কয়েকটি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে হানা দিয়ে নথিপত্র তছনছ করে এবং রেকর্ডপত্র, রেজিস্ট্রার ও কম্পিউটার নিয়ে যায়। শিপ ইয়ার্ডের মালিকেরা মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ বা প্রণীত কোন বিধান লংঘন করে কোন পন্য সরবরাহ করেননি বা কোন সেবা প্রদান করেননি। সুতরাং কথিত পণ্য বা সেবা প্রদানের সাথে সংশ্লিষ্ট নথি, কাগজপত্র ও কম্পিউটার জব্দ করা সমীচিন হয়নি বলে বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স এ- রিসাইক্লিং অ্যাসোসিয়েশন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অ্যাসোসিয়েশন মনে করেন, এতে সংশ্লিষ্ট ইয়ার্ড মালিকদের সাথে অন্যায় আচরণ করা হয়েছে। তাছাড়া ভ্যাট কর্তৃপক্ষের গঠিত টীমের আচরণের মাধ্যমে সরকারী খাতে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব প্রদানকারী ইয়ার্ড মালিকগণকে হেনস্থা ও অন্যায়ভাবে হয়রানি করা হয়েছে, যা অত্যন্ত মান হানিকর। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট শিপ ব্রকিং ইয়ার্ডে মালিকদের শত কোটি টাকার বিনিয়োগ ও ব্যবসার সুনাম রক্ষার্থে ইয়ার্ড মালিকগণ এবং বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স এ- রিসাইক্লিং অ্যাসোসিয়েশন জব্দকৃত রেকর্ডপত্র, রেজিষ্ট্রার ও কম্পিউটার স্ব স্ব ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষকে ফেরত প্রদান সহ টীমের অন্যায় আচরণের প্রতিবাদে অনির্দিষ্ট কালের জন্য শিপ ইয়ার্ডগুলোর সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছেন। উল্লেখ্য জাহাজ পুণঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার খাত বিবেচনায় সরকার ২০১১ সনে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের কার্যতালিকাভূক্ত করে। এ শিল্পের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় শিপ ব্রেকিং এ- রিসাইক্লিং কল-২০১১ প্রদান করে। ওই কলস এর বিধি বিধানের আলোকে জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ শিল্পের কর্মকা- পরিচালিত হচ্ছে। এ শিল্পে বিনিয়োগকারী তথা ইয়ার্ড মালিকগণ স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি করে স্ব - স্ব ইয়ার্ডে বিভাজন করতঃ কাঁচামাল হিসেবে শিপ স্ক্রাপ দেশের ষ্টিল রি রোলিং মিল সমূহে সরবরাহ করে। এ শিপ স্ক্রাপ থেকে উৎপাদিত রড, এংগেল, বার ইত্যাদি দেশের ভৌত অবকাঠামো বিনির্মাণে ব্যবহৃত হচ্ছে। দেশে লৌহ জাতীয় কাঁচামালের প্রায় ৬০% = ৭০% এ শিল্প খাত থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া স্ক্রাপ শিপে ব্যবহৃত আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী, বৈদ্যুতিক তার, মোটর, জেনারেটর ইত্যাদি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যবহার করে নিজ নিজ প্রয়োজন মিটাচ্ছে। জাহাজ বিসিং এর পূর্বেই মূল্য সংযোজন কর (মূসক), সম্পূরক শুল্প ইত্যাদি অগ্রিম পরিশোধ করা হয়। সুতরাং এ ক্ষেত্রে কর ফাঁকি দেয়ার কোন সুযোগ নেই। ইয়ার্ড মালিকগণ সরকারকে প্রতি অর্থবছরে শুদ্ধ, ভ্যাট ও কর বাবদ প্রায় ১২০০ কোটি টাকা প্রদান করেন।