কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নজিরবিহীন তা-ব চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম চৌফলদন্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দিলভর সুষ্ঠু নির্বাচন শেষে এ ঘটনা ঘটানো হয়। এ সময় নির্বাচন গ্রহণ কর্মকা-ে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কয়েক ঘন্টা একপ্রকার জিম্মি করে রাখা হয়। নৈরাজ্য চলাকালে ১০/১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে ঊর্ধ্বতন প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এসে কোনমতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তাগুব চলাকালেই ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণার পর প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টরা কেন্দ্র ত্যাগ করেন। প্রাপ্ত তথ্য প্রকাশ, পশ্চিম চৌফলদন্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১ নভেম্বর দিনব্যাপী সুষ্ঠু, অবাধ ও নির্বিঘœ পরিবেশে উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পুলিন কর্মকর্তাগণ প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কক্ষে গিয়ে ভোটের বাক্স ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম বুঝিয়ে দিতে থাকেন। এ সময় কিছু বুঝে উঠার আগেই চতুর্দিক থেকে দুর্বৃত্তরা বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় স্থাপিত ও তাতে অবস্থানরত ভোটগ্রহণে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে গুলি, কাঁদানে গ্যাস, ইট- পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। প্রাণ ভয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কক্ষে জিম্মি হয়ে পড়েন। এভাবে দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে থাকে। ইট-পাটকেলের আঘাতে সুসজ্জিত ও সুরম্য বিদ্যালয়টির অফিস ও বিভিন্ন শ্রেণি কক্ষের দরজা জানালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে। অসহায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চাইলে জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশিদ, পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান, কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুনির উল গিয়াস, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরুপম, জেলা পুলিশ, রেপিড একশন ব্যাটালিয়্যান, বিজিবি, দাঙ্গা পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে র্যাবের উচ্চপর্যায়ের টহল দল কেন্দ্রে উপস্থিত হন। তাদের উপস্থিতিতে শুরু হয় ভোট গণনা কার্যক্রম। রাতেই কেন্দ্রে ফলাফল বিবরণী টাঙিয়ে দেয়া হয়। তবে কি কারণে দুর্বৃত্তরা এ কেন্দ্রের উপর চলো তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে কেউ কেউ ধারণা করছেন ভোট গণনার আগে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের এজেন্টদের অপেক্ষা করতে বলায় এজেন্টরা তাদের কর্মী সমর্থকদের ভুল মেসেজ দিয়ে উত্তেজিত করায় এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মুহি উদ্দিন জানান, ভোট গণনা শুরু হওয়ার প্রাক্কালে যে তাগুব শুরু হয়েছে তা কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী ছিল। পরে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে তা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। সহকারি প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ছালেহা বেগম জানান, জীবনে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। ওই ওয়ার্ডে সাধারণ মেম্বার পদে বিজয়ী মোঃ আইয়ুব আলী বলেন, ঘটনাটি মোটেই ঠিক হয়নি। যে বা যারা করেছে সম্ভবত না বুঝেই তারা এমনটা করেছে। মিথ্যা কোনো গুজবের কারণে পুরো পরিস্থিতি অশান্তির দিকে চলে যায়।