চলতি অর্থবছরের মাত্র ৪ মাস পার হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ভর্তুকির টাকা দিতে অর্থ বিভাগকে চাপ দিচ্ছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় চলতি বাজেটে অতিরিক্ত ভর্তুকির চাহিদা জানিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগকে চিঠি দিচ্ছে। ইতিমধ্যে ৫ মন্ত্রণালয় অর্থ বিভাগের কাছে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি চাচ্ছে। আর ওই চাহিদার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয় ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়। অথচ চলতি বাজেটে ভর্তুকিতে বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ৩৪ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা। এমন পরিস্থিতিতে অর্থ বিভাগ চলতি বাজেটের ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করার চিন্তা-ভাবনা করছে। অর্থ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চলতি অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও ঋণ খাতে ৩৪ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। তার মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জন্য ভর্তুকি সংকুলান রয়েছে ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে- বিশ্ববাজারে সারের দাম বেড়ে গেছে। তাই যে পরিমাণ ভর্তুকি বরাদ্দ রয়েছে তাতে তাদের পোষাবে না। সারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য অনুসারে চলতি অর্থবছরে রাসায়নিক সার কেনার খরচ বেশি হবে। সেজন্য প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকির প্রয়োজন হতে পারে। অর্থাৎ কৃষি মন্ত্রণালয়ের ভর্তুকির প্রয়োজন বরাদ্দের দ্বিগুণেরও বেশি। আর চলতি বাজেটে বিদ্যুতের জন্য ভর্তুকি বরাদ্দ আছে ৯ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, ওই টাকায় তাদের চাহিদা মেটবে না। চলতি অর্থবছরের জন্য বিদ্যুতের ভর্তুকি দরকার কম করে হলেও ১২ হাজার কোটি টাকা। তাছাড়া আরো তিনটি মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি হিসেবে চাওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অর্থ বিভাগ থেকে পুরো ভর্তুকি বিষয়টি নতুন করে বিন্যাস করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সেজন্য ওই বিভাগ থেকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক উইংকে চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় কী পরিমাণ ভর্তুকি প্রয়োজন হতে পারে তার একটি মূল্যায়ন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এখন সামষ্টিক অর্থনৈতিক উইংয়ের মূল্যায়ন পাওয়ার পর চলতি অর্থবছরের ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করা হতে পারে।
এদিকে এ ব্যাপারে অর্থ বিভাগের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, কভিড-পরবর্তী অর্থনীতিতে অনেক পণ্যের দাম উঠানামা করছে। সারা বিশ্বেই এমন হচ্ছে। ফলে যে হিসাব করে ভর্তুকির বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল তাতে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। সেজন্যই মন্ত্রণালয়গুলোর ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করার চিন্তা করা হচ্ছে। অর্থাৎ যার কম প্রয়োজন তার বেশি থাকলে সেটি অন্য মন্ত্রণালয়কে দেয়া হতে পারে। তবে এখনো চূড়ান্ত কিছু হয়নি।