বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার কচুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১,২ ও ৩ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থী সেলিণা বেগম সেলির সমর্থণকারী মোঃ মোশারেফ শেখ (৭১) এর হাতে চুড়ি পড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য বালী শোকরানা রব্বানি আজাদের নির্দেশে ইকতিয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি এই ন্যাক্কার জনক ঘটনা ঘটিয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন কচুয়া উপজেলার গিমটাকাঠি এলাকার মোঃ মোশারেফ শেখ। এসময়, পরাজিত প্রার্থী সেলিণা বেগম সেলি ও মোঃ মোশারেফ হোসেনের ছেলে মোঃ রেজাউল শেখ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত ইকতিয়ার হোসেন।
মোঃ মোশারেফ শেখ বলেন, ২০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত কচুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের ১,২ ও ৩ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য প্রার্থী সেলিণা বেগম সেলি সমর্থণকারী ছিলাম। আমার সমর্থিত প্রার্থী তালগাছ প্রতিকের সেলিনা বেগম সেলি ভোটে হেরে যায়। কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক স্থানীয় ইউপি সদস্য বালী শোকরানা রব্বানি আজাদের সমর্থিত প্রার্থী বই প্রতিকের মোহিনি বেগম জয় লাভ করে। পরাজিত প্রার্থীর নির্বাচন করার অপরাধে সোমবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে বালী শোকরানা রব্বানি আজাদের নেতৃত্বে হাজরাখালি গ্রামের হানিফ খানের ছেলে ইকতিয়ার হোসেন, শহিদুল শেখসহ ১৫-২০ জন লোক আমার বাড়িতে এসে আমাকে হুমকী-ধামকী দেয়। একপর্যায়ে আমার পুত্রবধু, স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের সামনে বালী শোকরানা রব্বানি আজাদের নির্দেশে ইকতিয়ার হোসেন তার পকেট থেকে একটি চুরি বের করে আমার হাতে পড়ানোর চেষ্টা করে। আমার হাতের কবজি মোটা হওয়ার কারণে চুরিটি পুরোপুরি প্রবেশ করাতে পারেনি। আমাকে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার হুমকী দিয়ে তারা চলে যায়। এরপর তারা স্থানীয় বিভিন্ন মোড় ও বাজারে গিয়ে বলে মোশারেফ শেখের হাতে চুরি পড়িয়ে দিয়েছি। এই অপমান সহ্য করব কি করে। এখন আমি এলাকায় মুখ দেখাব কি করে এই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ৭১ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ।
পরাজিত প্রার্থী প্রার্থী সেলিণা বেগম সেলি বলেন, নির্বাচনের আগে থেকে ১ নং ওয়ার্ডের পুরুষ সদস্য ও সদস্য প্রার্থী বালী শোকরানা রব্বানি আজাদ আমাকে ও আমার সমর্থকদের নানাভাবে হুমকী-ধামকী দিয়েছে। আমার একাধিক সমর্থকদের মেরেছেও। মঙ্গলবার সকালেও গিমটাকাঠি গ্রামের সাহাপাড়া এলাকার খোকন সাহা, পলাশী রানী সাহা ও সুশান্তকে মারধর করেছে। নির্বাচনে আমাকে ভোট দেওয়াই কাল হয়েছে এসব মানুষের।
মোঃ মোশারেফ শেখের ছেলে মোঃ রেজাউল শেখ বলেন, আমার বৃদ্ধ বাবাকে এভাবে অপমান অপদস্থ করল এরকি কোন বিচার নেই। আমার বাবা রাতে কয়েক বার অজ্ঞান হয়ে পড়েছে। এই ধরণের ন্যাক্কার জনক ঘটনার আমরা কঠিন শাস্তি চাই।
কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক স্থানীয় ইউপি সদস্য বালী শোকরানা রব্বানি আজাদ বলেন, এই ধরণের ন্যাক্কার জনক ঘটনা আমার নির্দেশে ঘটেনি। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই নাটক সাজানো হয়েছে। যদি এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটে থাকে আমি তার তীব্র নিন্দা জানাই। দোষীদের শাস্তির দাবি করি।