বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার জোড়গাছা মডেল মহিলা কলেজ মামলা জনিত সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পরেছে। কলেজটিতে মামলা জনিত কারণে এলাকায় নারী শিক্ষার আলো ছড়ানোতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, স্থানীয়ভাবে সমস্যার মিটমাট করতে পারলে সমাধান করে শিক্ষার পরিবেশ দ্রুতই ফিরে আনা সম্ভব। স্থানীয়রা ও কলেজ সূত্রে জানাগেছে, ২০০৯ সালে ধুনট-সারিয়াকান্দি উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার দক্ষিণ জোড়গাছা মৌজা গ্রামের বিদ্যানুরাগী ব্যক্তিরা নারী শিক্ষার বিকাশ ঘটাতে গড়ে তোলেন জোড়গাছা মডেল মহিলা কলেজ। কলেজের ২০ কি:মি: এলাকার মধ্যে নারী শিক্ষার কোন প্রতিষ্ঠান না থাকায় স্থানীয়রা গঠন করেন ওই মহিলা কলেজ। কলেজটি ১২৫ শতক জমি নিয়ে কলেজটি গড়ে তোলেন স্থানীয়রা। তবে ৩৪ শতাংশ জমির উপর টিন সেড ভবন তৈরি করা হয়েছে। নড়বড়ে ওই ঘরেই কোন রকমে চলছে উচ্চমাধ্যমিকনারী শিক্ষার পাঠদান। কলেজের শুরুতে মো: আশারাফুল ইসলাম অধ্যক্ষ নিযুক্ত হয়ে কালেজ পরিচালিত হলেও পরবর্তিতে তিনি কলেজটির ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্ত মোতাবেক অধ্যক্ষ পদ থেকে তাকে অপসারণ করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পাশ্ববর্তী জোড়গাছা ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক পদে কর্মরত। তারা অভিযোগ করেন, একই ব্যক্তি দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকার সুযোগ নেই। ডিগ্রী মাদ্রাসার ইংরেজি প্রভাষক পদ থেকে পদত্যাগ না করায় মো: আশরাফুল ইসলাম এর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে নিয়োগ বাতিল হয়ে যায় এবং মো: জুলফিকার আলী রায়হান অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পান। এরপর বহিস্কৃত অধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম ও অধ্যক্ষ মো: জুলফিকার আলী রায়হানের লোকজনের মধ্যে চলতে থাকে পালটা-পালটি বিভিন্ন ধরনের মামলা। জোড়গাছা ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নূর আলম বলেন, যে সময় উনি (আশরাফুল ইসলাম) মডেল মহিলা কলেজের কোন বিধিমালায় অধ্যক্ষ নিয়োগ হয়েছিলেন তা আমি বলতে পারবোনা। ওই সময় আমি অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলাম না। বহিস্কৃত অধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিধি মোতাবেক আমি ওই কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হয়েছিলাম। এ ব্যাপারে মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো: জুলফিকার আলী রায়হান বলেন, এ এলাকায় নারী শিক্ষার বিকাশ করতে মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হলেও এলাকার কিছু লোকের ভুল বোঝাবুঝির কারণে কলেজটি সরকারীভাবে অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি পাচ্ছেনা। ফলে বর্তমানে বিভিন্ন মামলা-মোকাদ্দমার কারণে নারী শিক্ষার অন্তরায় হয়ে দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকশিক্ষা বোর্ড রাজশাহী কলেজ পরিদর্শক মো: হাবিবুর রহমানের সাথে কথা হয় মোবাইল ফোনে। তিনি বলেন, সমস্যাটি অনেক বড়। তবে স্থানীয়ভাবে বসে সমস্যাটির নিষ্পত্তি করতে পারলে খুবই ভালো হয়। আপনারাতো এটা করতে পারেন। তাহলে কলেজে খুব শীঘ্রই শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব। আইনগতভাবে সমস্যার সমাধান করতে গেলে অনেকদিন সময় লাগবে, তাতে কলেজের ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ হবে না।