খুলনার পাইকগাছায় প্রত্যন্ত ইউনিয়ন লতা। লতা ইউনিয়নের ছয় গ্রামে কোমলমতি শিশুদের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য মাত্র দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যার একটি দূরত্ব ৩ কিলোমিটার অন্যটির ২ কিলোমিটার। যার কারণে কোমলমতি শিশুরা দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। সে কারণে শিবসা নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থিত হাড়িয়া গ্রামের চারজন স্বপ্নবান শিক্ষিত যুবক শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গড়ে তোলেন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর শেফালী স্মৃতি বিদ্যা নিকেতন নামে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। নিজেদের অর্থ খরচ করে এ পাঠশালাটি মাটির দেয়াল ও টিনের ছাওনি দেয়া হয়। বর্তমানে অর্থ অভাবে প্রতিষ্ঠানটি পাকাকরণ করা সম্ভব হয়নি। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও প্রতিষ্ঠাতা গৌরহরি রায় প্রিতম জানান, তিল তিল করে চার বছর ধরে এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছি। বর্তমানে অর্থ অভাবে ভাঙ্গা ঘরে শিক্ষার গুণগত মান রক্ষা করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল এ অবহেলিত শিক্ষাবঞ্চিত এলাকার কোমলমতি শিশুদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা। এ এলাকা থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে হওয়ার কারণে ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ও রাস্তাঘাট কর্দমাক্ত থাকায় অভিভাবকরা তাদের বাঁচ্চাদের নিয়ে স্কুুলে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। শিশুদের সুশিক্ষিত করার লক্ষ্যে তিনি সরকারের কাছে একটি আধুনিক ভবনের দাবি জানান। ওই পাঠশালার শিক্ষক নিত্যানন্দ রায়, নয়ন রায় ও অমিত রায় জানান, হাড়িয়া, ধলায়, সচিয়ারবন্ধ, পুতলাখালীসহ ৬ গ্রামের দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সেকারনে আমরা কয়েক বন্ধু মিলে চার বছর ধরে নিজেদোর অর্থায়ণে শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে শিক্ষা দান করে আসছি। বর্তমানে পাঠশাটি একটি কক্ষ নিয়ে শতাধিক ছেলে মেয়েদের পাঠদান করানো খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। উপজেলাসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট একটাই দাবি একটি আধুনিক শিক্ষা সহায়ক ভবন নির্মাণের জন্য। কয়েকজন অবিভাবক বলেন, ইউনিয়নের রাস্তাগুলোও অত্যন্ত ভঙ্গুর ও নাজুক। একটু বৃষ্টিতে অধিকাংশ মাটির রাস্তার উপর পানি উঠে যায়। কাঁদা মাটির রাস্তায় চলাচল করা খুবই কষ্টকর হয়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যুৎ রঞ্জন সাহা বলেন, এটি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এখানে সরকারিভাবে প্রতিষ্ঠান গড়ার সুযোগ নেই। সেহেতু আমি ভবনের বিষয়ে কোনো কিছু বলতে পারছি না। তবে শিশুদের স্কুলমুখী করার জন্য ভালো উদ্যোগ। উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু জানান, বিষয়টি শুনলাম আগামী মাসে সমন্নয় সভায় উত্থাপন করে পাঠশালাটির উন্নয়ন করার জন্য যা যা প্রয়োজন তা করা হবে।