দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর সারা দেশের ন্যায় খুলেছে খুলনার উপকুলিয় উপজেলা দাকোপের প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলো। সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্য বিধি মেনে পাঠদানে খুশী কোমল মতি শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা।
প্রানঘাতি ভাইরাস করোনার প্রভাবে ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে এক যোগে বন্দ ঘোষনা করা হয় দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়। চরম অনিশ্চয়তার মূখে পড়ে কোমলমতি শিক্ষা কার্যক্রম। দীর্ঘ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্দ থাকায় অনেকের ঝরে পড়ার আশংকায় উদ্বেগ উৎকন্ঠার মাঝে অভিবাবক মহল। অবশেষে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ দেশ ব্যাপী খুলে দেওয়া হয় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ প্রায় ১৮ মাস পর সারা দেশের ন্যায় দাকোপের ১১৯ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারায় শিক্ষক শিক্ষার্থী অভিবাবক সকল পক্ষের মাঝে বয়ে আসে খুশীর বার্তা। শুরু থেকেই কঠোর স্বাস্থ্য বিধিসহ সরকার ঘোষিত বেশ কিছু নির্দেশিকা মেনেই দাকোপে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। উপজেলা সদরের চালনা বাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নুকুল চন্দ্র ব্লু বার্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্কুলে প্রবেশের সময় হাত ধোয়া, নির্দিষ্ট দূরত্বে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরন করে বসে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১ হাজার ৬ শ’ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৬% শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে চলছে পাঠদান। সপ্তাহের প্রতি শনিবার ৪র্থ ও ৫ম, রোববার ৩য় ও ৫ম, সোমবার ২য় ও ৫ম, মঙ্গলবার ১ম ও ৫ম, বুধবার ৪র্থ ও ৫ম এবং বৃহস্পতিবার ৩য় ও ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে। দীর্ঘদিন পর ক্লাস শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থীরা যেমন উৎসব মূখর পরিবেশে স্কুলে আসছে তেমনি অভিবাবকরাও বেশ খুশী। তবে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা গুলোতে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভাব এবং শিক্ষার্থীদের শাররীক দূরত্ব নিশ্চিত করতে গিয়ে পাঠদান কক্ষের সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে কিছু কিছু জায়গায়। অপরদিকে করোনায় পরিবারের আর্থিক দৈন্যতার প্রভাবে কিছু শিক্ষার্থীর ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। দাকোপে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে প্রধান ও সহকারী শিক্ষক মিলিয়ে ২২ টি পদ শুন্য আছে বলে জানা গেছে। করোনা পরবর্তী পাঠদানের বিষয়ে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কোভিট-১৯ পরিস্থিতিতে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরনে শিখন তরান্বিতকরন পরিকল্পনা বিষয়ক অনলাইন ওরিয়েন্টশন গত ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে সমগ্র উপজেলার ৫৭৬ জন শিক্ষক অংশ নিয়েছে। যেটি পাঠদানের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি দাবী করেছেন সকলে সুস্থ থেকে শ্রেনী কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে।