ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তফসিল এখনো ঘোষণা হয়নি। তবে আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ব্যাপক উৎসাহে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সবাই নিজ নিজ এলাকায় জনসংযোগ করে দলীয় মনোনয়ন লাভের আশা করছেন। ঐক্য তৈরি হওয়ায় আওয়ামী লীগে দলীয় কোন্দল নেই বলেও দাবি করা হয়েছে।
জানা গেছে, আসন্ন ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণ, ব্যানার, ফেস্টুন ও মিছিলে মিছিলে মুখর হয়ে উঠেছে প্রতিটি গ্রাম এলাকা। প্রতিটি ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান সহ একাধিক নেতা দলীয় মনোনয়ন পেতে সক্রিয় রয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরব প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা।
স্থানীয় ও দলীয় সূত্র জানায়, উপজেলার রসুলপুর ইউপিতে সম্ভাব্য ৬ জন, বারবাড়িয়ায় ৪ জন, চরআলগীতে ৭ জন, সালটিয়ায় ৫ জন, যশরায় ৫ জন, রাওনায় ৬ জন, মশাখালীতে ৭ জন, গফরগাঁও ৮ জন, পাঁচবাগ ৬ জন, উস্থি ৩ জন, লংগাইর ৪ জন, পাইথল ৪ জন, দত্তেরবাজার ৮ জন, নিগুয়ারী ১০ জন ও টাংগাব ইউপিতে ৪ জন প্রার্থিতা পাওয়ার আশায় প্রচারণা চালাচ্ছেন। এদিকে দলীয় ঐক্য শক্তিশালী করতে ও বিদ্রোহী প্রার্থী ঠেকাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও সাংসদ ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ওয়ার্ড ভিত্তিক সভা করে এক মঞ্চে দাঁড়ানোর পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সে অনুযায়ী তৃণমূলে সম্ভাব্য প্রার্থীদের এক মঞ্চে রেখে ১৫টি ইউপির প্রতিটি ওয়ার্ডে আলোচনা সভার মাধ্যমে প্রচারণার কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি ইউপিতে ওয়ার্ড ভিত্তিক বিশেষ বর্ধিত সভা চলছে। সভায় এলাকায় সরকারের উন্নয়ন চিত্র ও ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগে ঐক্য গড়ে উঠেছে বলে দাবি করছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
দলীয় নেতা-কর্মীদের অনেকে বলছেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সিদ্ধান্তে এখন এক মঞ্চে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। সবাই একত্রে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করায় সংঘাতের আশঙ্কা কমেছে। স্থানীয় নির্বাচনে এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। শিক্ষক আজহারুল হক বলেন, ‘অতীতে দেখা গিয়েছে নির্বাচনের প্রচারণা নিয়ে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে। তবে সব প্রার্থীর এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রচারণা এই প্রথম দেখলাম। সুশৃঙ্খল ভাবে তাঁদের ও দলের প্রচারণা চালাচ্ছেন। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’ ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বলেন, ‘সাংসদ ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের আহ্বানে তৃণমূল আওয়ামী লীগে এই ব্যতিক্রমী ঐক্য গড়ে উঠেছে। গফরগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এটি একটি দৃষ্টান্ত বলতে হবে।’
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আশরাফ উদ্দিন বাদল বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচনে এ রকম সিদ্ধান্ত আর কোথাও হয়নি। তৃণমূলে আওয়ামী লীগের ঐক্য ধরে রাখার জন্য এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দল ও নেতা-কর্মীরা এর সুফল ভোগ করবে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে সম্প্রীতি বজায় রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সকলে এক মঞ্চে এসে সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরছে। পাশপাশি ২০০১ সালে জামাত বিএনপি উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ডে যে তান্ডব চালিয়েছিলো সেগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরছে।