ড্রাগন ফল। কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশের মানুষ জানতো এটি বিদেশি ফল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে দেশে এর চাষ এতোটা বেড়েছে যে, এখন এটি দেশি ফল বলেও পরিচিত। রাজশাহীর চারঘাটে এই প্রথম ড্রাগনের চাষ হচ্ছে। টক-মিষ্টি ও মিষ্টি স্বাদের ড্রাগন চাষ শুরু করেছেন কলেজ শিক্ষক ইসমাইল হোসেন।
ইসমাইল হোসেন চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের মাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং বিড়ালদহ কলেজের প্রভাষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি গ্রামে কৃষিকাজ করেন তিনি। গতানুগতিক কৃষির ওপর নির্ভরশীল না হয়ে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে লাভজনক ফসল উৎপাদনে বিশ্বাসী তিনি। তাই তাঁর মাল্টা বাগানের সাথে দুই বিঘা ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেছেন।
বাগান ঘুরে দেখা যায়, চারদিকে মাল্টা বাগানের সবুজের সমারোহ। তাঁর মাঝখানে বড় হয়ে উঠছে মাল্টা বাগান। প্রায় পাঁচ ফুট উচ্চতার প্রতিটি কংক্রিটের খুঁটি পেঁচিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ড্রাগন ফলের গাছ। জমিতে রয়েছে ৪শ খুঁটি। এক খুঁটি থেকে অন্য খুঁটির দূরত্ব সাড়ে সাত ফুট দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ছয় ফুট প্রস্থ।প্রত্যেক খুঁটিতে ৪টি করে গাছ লাগানো হয়েছে। ড্রাগন ফল গাছ খুব দ্রুত বাড়ে এবং শাখা তৈরি করে। একটি গাছ বছরে ৩০টি পর্যন্ত শাখা তৈরি করতে পারে।
ড্রাগন চাষি কলেজ শিক্ষক ইসমাইল হোসেন জানান, ইউটিউব দেখে শখের বশে তিনি বাড়ির পরিত্যক্ত জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। সেখান থেকে কিছু ফল বিক্রি করে লাভবান হোন তিনি। তবে এবারই প্রথম বানিজ্যিক ভাবে ড্রাগন চাষ শুরু করেছেন। প্রায় ৩ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করেছেন। ফলের বাগান সার্বক্ষণিক দেখভালের জন্য মাসিক বেতনে দু’জন কেয়ারটেকার নিযুক্ত করেছেন। তারাই সবসময় ড্রাগন বাগান তদারকি করেন।
তিনি আরো জানান, ড্রাগন ফল রোপণের এক বছরের মাথায় ফল সংগ্রহ করা যায়। প্রতিটি ফল ২০০-৩০০ গ্রাম করে ওজন হয়। প্রতি কেজি ফল পাইকারি ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা বিক্রি হয়। ড্রাগন ফল চাষে অনেক খরচ হলেও এটি অনেক লাভজনক। তাঁর দেখে আরো অনেকেই ড্রাগন চাষে আগ্রহী হচ্ছেন বলে জানান তিনি।
শলুয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীম রেজা জানান, বাণিজ্যিকভাবে চারঘাট উপজেলায় ড্রাগন চাষ এই প্রথম। ড্রাগন ফলের চাষ শুরুর পর থেকেই কখন কীভাবে গাছের পরিচর্যা নিতে হবে সে বিষয়ে শিক্ষক ইসমাইল পরামর্শ দিয়ে আসছি। ড্রাগন ফল চাষে জৈব সার একটু বেশি লাগে। রাসায়নিক সার কম লাগে। তার দেখে অনেক কৃষক ড্রাগন চাষের জন্য পরামর্শ নিতে আসছেন।