দীর্ঘ দিন সম্মেলন না হওয়ায় ঝিমিয়ে পড়েছে দাকোপ উপজেলা আওয়ামী যুবলীগ। বর্তমানের শীর্ষ দু’নেতা জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন এবং মূলদলে পদায়ন হওয়ায় নেই কোন স্বতন্ত্র সাংগঠনিক তৎপরতা। নেতৃত্ব প্রত্যাশী তরুন নেতারা বিভিন্ন দিবস পালনের মাধ্যমে বহৎ যুব সংগঠনটির ব্যানার ধরে রেখেছেন।
বাংলাদেশের প্রাচীন এবং সর্ববৃহৎ যুব সংগঠন আওয়ামী যুবলীগ দাকোপে নেতৃত্ব সংকটের কারণে ঝিমিয়ে পড়েছে। সর্ব শেষ ২রা এপ্রিল ২০০৫ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা যুবলীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনে গৌরপদ বাছাড়কে সভাপতি এবং মিহির মন্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়। এরপর সভাপতি গৌরপদ বাছাড় ধারাবাহিক ৩ বারের উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং সম্পাদক মিহির মন্ডল অনুরুপভাবে ৩য় বারের মত ইউপি চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সাথে মিহির মন্ডল দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন। জনপ্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব পালন এবং দীর্ঘকাল পদে থাকায় তাদের পক্ষে আর যুবলীগের সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন সম্ভব হচ্ছেনা এমন মন্তব্য সংগঠনটির তৃনমূলের নেতাকর্মিদের। অর্থাৎ নেতৃত্ব সংকটের কারণে গত কয়েক বছর উপজেলা যুবলীগ তেমন কোন সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যর্থ হয়েছে। এ সময়ে দাকোপে নতুন নেতৃত্ব প্রত্যাশীরা বিভিন্ন দিবস পালনের মাধ্যমে কোন মতে সংগঠনের ব্যানারটি ধরে রেখেছেন। যুবলীগের এই চরম সংকটকালে যারা দাকোপে সংগঠনের হাল ধরে রেখেছে তাদেরকেই আগামীতে মূল দায়িত্বে দেখতে চায় তৃনমূলের যুবলীগ। নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচীত নাম হিসাবে আলোচনায় আছেন যারা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আওয়ামী পরিবারের সদস্য দাকোপে গত কয়েক বছর যুবলীগসহ আওয়ামী রাজনীতির সকল কর্মসূচি পালনে যার বিশেষ অবদানের কথা শোনা যায় সেই যুবনেতা জাহিদুর রহমান মিল্টন, যুবলীগনেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুম, সাবেক ছাত্রনেতা রবার্ট হালদার, সঞ্জিব রায়, তৃনমূল থেকে উঠে আসা ত্যাগী ছাত্রনেতা সর্বশেষ উপজেলা ছাত্রলীগের বিদায়ী সাধরণ সম্পাদক রতন মন্ডলসহ আরো কয়েকজন আছেন লবিংয়ে। নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের মধ্যে সাংগঠনিক তৎপরতায় এগিয়ে আছেন যুবনেতা জাহিদুর রহমান মিল্টন ও রতন কুমার মন্ডল। তবে দলের একটি অংশ জাহিদুর রহমান মিল্টনের বিরুদ্ধে অতীতে ছাত্রদল সমর্থক থাকার অভিযোগ তুলেছেন। এমন অভিযোগ অস্বীকার করে মিল্টন বলেন, আমার পিতা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ নুরুল ইসলাম তৎকালীন মুজিব বাহিনীর সদস্য এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি পানখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। আমি তার সন্তান ছাত্র জীবন থেকে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। ভিন্ন কোন দলের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগটি সম্পূর্ন মিথ্যা দাবী করে তিনি বলেন, যুবলীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে আমাকে দাবিয়ে রাখতে প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে এমন অপপ্রচার। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দাকোপ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচীব আবদুল মান্নান খান এবং উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি চালনা পৌর বিএনপির সদস্য সচীব শেখ মোজাফ্ফার হোসেন বলেন, জাহিদুর রহমান মিল্টন ছাত্রদল বা বিএনপির রাজনীতির সাথে কখনই সম্পৃক্ত ছিলেন না। বরং তাকে ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে দেখেছেন বলে দাবী করেন শেখ মোজাফ্ফার হোসেন। এদিকে ৩ বছরের জন্য গঠিত কমিটির দায়িত্বশীলরা গত ১৬ বছর যাবৎ পদ আকড়ে থাকায় বৃহৎ যুব সংগঠনে সৃষ্টি হয়নি নতুন নেতৃত্ব। ফলে স্বাভাবিক ভাবে ঝিমিয়ে পড়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম। আগামীতে ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনে গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যোগ্যরাই দায়িত্বে আসবেন এমনটাই আশা করছেন দাকোপে আওয়ামী যুবলীগের সর্বস্থরের নেতাকর্মি ও সমর্থকবৃন্দ।