ঢাকার সাভারের আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় প্রধান আসামিসহ ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১৯ জনের যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইসমত জাহান এই রায় ঘোষণা করেন। বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে রায় পড়া শুরু করে ১১টা ৫০ মিনিটে শেষ হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ১৩ জনের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সাজা দেওয়া হয়। আর যাবজ্জীবন প্রাপ্তদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আবদুল মালেক, সাঈদ মেম্বার, রশিদ, ঈসমাইল, লিমন, মীর হোসেন, মজিবর রহমার ওরফে বরিশাইল্লা মজিবর, আনোয়ার হোসেন, রজব আলী, আলম, মো. রানা, আবদুল হামিদ ও আসলাম মিয়া। এ ছাড়া রায়ে ২৫ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। আর বিচার চলাকালে তিন আসামির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবে বরাতের রাতে আমিনবাজারের বড়দেশি গ্রামের কেবলার চরে ডাকাত সন্দেহে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতরা হলেন- ম্যাপললিফের এ লেভেলের ছাত্র শামস রহিম শামীম, মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র তৌহিদুর রহমান পলাশ, ইব্রাহিম খলিল, কামরুজ্জামান কান্ত, তেজগাঁও কলেজের ছাত্র টিপু সুলতান ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএর ছাত্র সিতাব জাবির মুনিব।
ঘটনার পর নিহতদের বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগ এনে গ্রামবাসীর পক্ষে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন বালু ব্যবসায়ী আবদুল মালেক। তদন্তে ডাকাতির মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হয় এবং ছয় ছাত্রকে হত্যার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে সাভার থানায় একটি মামলা করে। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলাটি র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি র্যাব ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে একটি অভিযোগপত্র জমা দেয়। অভিযোগপত্রে সাক্ষী করা হয় ৯২ জনকে।