গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামীকাল রোববার (২৬ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইউনিয়নটি মূলত খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকা হলেও বিপুল পরিমান মুসলিম ও হিন্দু ভোটার রয়েছেন। বিগত দিনের স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইউনিয়নটি নৌকার ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত।
নাগরী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিন জন প্রার্থী নির্বাচন করছেন। বর্তমান ক্ষমতাশীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান অলিউল ইসলাম অলি, জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে মো. মনির হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চশমা প্রতীক নিয়ে এ্যাড. সিরাজ মিয়া প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। এছাড়াও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৪ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
সরেজমিনে নাগরী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রার্থীদের পক্ষে তাদের নেতাকর্মীরা সভা সমাবেশের পাশাপাশি পোষ্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড, ফেসবুক-টুইটারে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালিয়েছেন। বর্তমান ক্ষমতাশীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাস্তা-ঘাট নির্মাণ ও সংস্কার করেছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দিয়েছে। সরকারদলীয় প্রার্থী ব্যতিত অন্য কাউকে নির্বাচিত করলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে উন্নয়নের মার্কা হিসেবে তারা নৌকাতেই তাদের আস্থা রাখছেন। তবে নির্বাচনে চশমা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান এ্যাড. সিরাজ মিয়াও নির্বাচনে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্ধীতাকারী একাধিক প্রার্থী জানান, নির্বাচন সুষ্ঠ, অবাধ ও নিরপেক্ষ হলে তারা বিজয়ী হবেন।
উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ফারিজা নূর জানান, ২৬ ডিসেম্বর রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটার তালিকা অনুযায়ী ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৩০ হাজার ৬৯৭ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫ হাজার ৫২৬ জন ও মহিলা ভোটার ১৫ হাজার ১৭১ জন। ভোটাররা ৯টি ওয়ার্ডের ১৪টি ভোট কেন্দ্রের ৮৭টি কক্ষে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ করতে আমরা সর্বাত্বক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) কায়সার আহমেদ জানান, নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্নভাবে করতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বাত্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে ইউনিয়নের ২টি পয়েন্টে চেক পোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনী এলাকায় পুলিশের ৩টি মোবাইল টিম ছাড়াও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি টিম কাজ করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসসাদিকজামান জানান, ২৬ ডিসেম্বর গাজীপুর জেলার মধ্যে শুধুমাত্র নাগরী ও বাড়িয়া ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই জেলার সকলের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ওই ইউনিয়নের নির্বাচন। নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করতে আমাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। নির্বাচনে কেউ যেন আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে না পারে সেজন্য মাঠে ভ্রাম্যমান আদালত কাজ করছে।