পঞ্চম ধাপে আসন্ন দুর্গাপুর উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি বাড়িতে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র রামদা তৈরি করছিল এক কর্মকার। মঙ্গলবার বেলা দেঁড়টার সময় উপজেলার মাড়িয়া দহপাড়া এলাকায় ওই কর্মকারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৬টি দেশীয় অস্ত্র রামদা উদ্ধার করে থানার পুলিশ। এ সময় জনি কর্মকার (৩০) নামের এক ব্যক্তিকে ধাওয়া করে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয় এলাকাবাসী। তিনি ওই গ্রামের বাসিন্দা মকছেদ কর্মকারের ছেলে। এসব অস্ত্র আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দুর্গাপুর থানার উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুল লতিফ বলেন, আটককৃত জনি কর্মকারের পিতা মকছেদ কর্মকার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরয়োনা থাকায় মঙ্গলবার দুপুরে মকছেদ কর্মকারের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় মকছেদ কর্মকার বাড়িতে ছিলেন না। এ সময় স্থানীয়দের তথ্যমতে তার বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। এতে ভোটের কাজে ব্যবহারের জন্য তৈরিকৃত ১৬টি দেশীয় অস্ত্র রামদা উদ্ধার করা হয়। ওই রামদা গুলো স্থানীয় মসজিদের খতিব আজাদ ও ইয়াছিন নামের এক ব্যক্তি তৈরি করতে দিয়েছেন বলে আটকৃত ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক দিন থেকে জনি কর্মকার তার কারখানায় গোপনে রামদা তৈরি করছিলেন। এলাকায় লোকজন বিষয়টি দেখেও চুপ করেছিলেন। মঙ্গলবার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মকছেদ কর্মকারের বাড়িতে অভিযানের সময় স্থানীয়রা তার বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র রামদা তৈরি খবরটি পুলিশকে জানায়। পুলিশ তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ১৬টি রামদা উদ্ধার করে। এদিকে, জনি কর্মকার তার বাড়িতে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয় উত্তেজিত জনতা জনিকে ধাওয়া করে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশের হাতে আটকের পর জনি কর্মকার স্বীকারোক্তিতে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমার বাবা খুবই অসুস্থ। বাবার চিকিৎসার টাকার জন্য বেশি টাকার লোভে সে গুলো তৈরি করছিলাম। আর এসব রামদা তৈরি করতে দিয়েছেন স্থানীয় মসজিদের খতিব আজাদ ও ইয়াছিন নামের এক ব্যক্তি।
জানা গেছে, আগামী ৫জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে এবার (আনারস) প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়েছন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান হাসান ইমাম ফারুক সুমন। তাঁর একনিষ্ঠ কর্মী আজাদ ও ইয়াছিন। তারা নির্বাচনি কাজে জনগণকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের লক্ষে এসব অস্ত্র তৈরি ও মজুদ করা হচ্ছিল।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি হাশমত আলী বলেন, ওই ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। দেশীয় অস্ত্র রামদা গুলো উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধেও থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান ওসি।