আমেজ আর উৎসবের আলোর ফাঁকে শঙ্কা, বাঁধা, হামলা ও একই সাথে স্বতন্ত্রেদের কেন্দ্র দখল ও হামলার অভিযোগের নালিশের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের নানা অভাব অভিযোগের মধ্য দিয়ে ৫ জানুয়ারী ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ভোট উৎসব। আগামী ৫ জানুয়ারী ওই ১৩টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নের নারী পুরুষ মিলে এইদিন মোট ২ লাখ ৭১ হাজার ৪১৪ জন ভোটার তাদের ভোট প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার হচ্ছেন ১লাখ ৪০ হাজার ৯৭৩ জন ও মহিলা ভোটার ১লাখ ৭০ হাজার ৪৪১ জন। তবে, জেলা ও উপজেলা এবং পুলিশ প্রশাসনের সাফ কথা তৃণমূলের এই নির্বাচন হবে অবাধ ও নিরপক্ষ, কোন সুযোগ নেই ভোটার ও ভোটের ওপর কালো হাত বসানোর। নির্বাচনে পুরো এলাকা থাকবে বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, ব্যাটলিয়ান পুলিশ ও আনসার-ভিডিপি বাহিনীর দ্ধারা নিরাপত্তার চাদরে বেষ্টিত।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, ৫ম ধাপের ঘোষিত নির্বাচনী তফশিল অনুযায়ী এ উপজেলার ১৩ ইউনিয়নে আগামী ৫ জানুয়ারী ভোট অনুষ্ঠিত হবে উপজেলার বালিথুবা পূর্ব, বালিথুবা পশ্চিম, সুবিদপুর পূর্ব, সুবিদপুর পশ্চিম, গুপ্টি পূর্ব,গুপ্টি পশ্চিম, পাইকপাড়া উত্তর,গোবিন্দপুর উত্তর,গোবিন্দপুর দক্ষিন, চরদুঃখীয়া পূর্ব, চরদুঃখীয়া পশ্চিম, রূপসা উত্তর, রূপসা দক্ষিন ইউনিয়নের মধ্যে। ওই ইউনিয়ন গুলোতে মোট ভোটারের সংখ্যা হচ্ছে ২ লাখ ৭১ হাজার ৪১৪ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার হচ্ছেন ১লাখ ৪০হাজার ৯৭৩জন ও মহিলা ভোটার ১লাখ ৭০ হাজার ৪৪১ জন। ১৩ ইউনিয়নের মোট প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর সংখ্যা হচ্ছে ৬৯৩ জন। এরমধ্যে রয়েছেন চেয়ারম্যান পদে ৭৩ জন, সংরক্ষিত আসনে (মহিলা) সদস্য পদে ১২৪ জন ও সাধারণ সদস্য পদে রয়েছেন ৪৯৬ জন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা ও আচরণবিধি পুরোপুরি ভাবে মেনে চলার জন্য মাঠ পর্যায়ে কঠোর নজরদারী করা হচ্ছে। নির্বাচনে যে কোন অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহনের জন্য কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষন প্রদান কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছেন প্রিজাইডিং অফিসার ১২২ জন, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ৭৭২জন।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সমন্বয়ক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিউলী হরি নির্বাচন বিষয়ে এক প্রশ্নে বলেন, ভোটার ও প্রার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা আমরা মাথায় রেখে, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সকল ব্যবস্থা ও পরিকল্পনা আমরা হাতে নিয়েছি। নির্বাচন চলাকালে ভোট কেন্দ্রে ও নির্বাচনী এলাকায় কোন প্রকার সহিংসত কিংবা কারোও হস্তক্ষেপ বা ভোট কেন্দ্র দখলের চিন্তা করা ভুল হবে। এই ক্ষেত্রে নিবার্চনী পরিবেশ রক্ষায় আমরা সর্বেচ্চ ব্যবস্থা নিবো। আমরা চাই ভোটাররা তাদের ভোট অধিকার নির্বিঘেœ প্রয়োগ করবে। ভোটের আগের দিন থেকে পুরো নির্বাচনী এলাকা ৫ স্তরের নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা বেষ্টিত থাকবে। প্রতিটি ইউনিয়নে একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্র্যাটের অধিনে বিজিবি ও র্যাব বাহিনী ষ্ট্রাকিং হিসেবে নির্বাচনী এলাকায় নিরাপত্তায় থাকবে।
এদিকে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভোটারদের মধ্যে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিকট থেকে নানা অভিযোগ পাওয়া যায়। তারা ভোটার ও তাদের নিরাপত্তা নিয়ে র্দূচিন্তায় আছে। ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে বালিথুবা পূর্ব, ১৬ নং রূপসা দক্ষিণ, ১২ নং চর দুঃখিয়া, ১৫ নং রূপসা, ৯ন ং গোবিন্দপুর ও ১০ নং গোবিন্দপুর ইউনিয়নের সব গুলো ভোট কেন্দ্র অতি ঝুঁকিপূর্ণ বলে প্রার্থী ও ভোটাররা চিন্তায় আছেন। ইতোমধ্যে নির্বচনী প্রচার চলাকালে এইসব এলাকায় বেশ কয়েকটি সহিংসতার ঘটনা ঘটে গেছে। অপর দিকে ক্ষমতাসীন দলের অনেক প্রার্থী তাদের দলে অভ্যন্তরিন গ্রুপিং ও ক্রোন্দলের কারণে নির্বাচন নিয়ে র্দূচিন্তায় আছেন। তাদের ধারনা দলীয় অপ-শক্তি ভোট কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থী ২ নং বালিথুবার হারুন অর রশির, ১২ নং চরদুঃখিয়ার হাসান আবদুল হাই, ১২ নং চরদুঃখিয়ার শাহজাহান মাষ্টার, ৬ নং গুপ্টি’র বুলবুল আহমেদ, ৯ নং গোবিন্দপুরের শাহ আলম ২ নং বালিথুবার শাহাদাৎ হোসেন, নয়ন, ১ নং বালিথুবার জসিম উদ্দীন স্বপন, ১১ নং চরদুঃখিয়ার বাছির ও হারুনুর রশীদসহ বিভিন্ন বিদ্রোহী ও স্বতেন্ত্র প্রার্থীরা জানান, রাতের আঁধারে আমার প্রদ্বিন্দ্বী প্রার্থীদের লোকজন আমাদের প্রচারনার ব্যানার পেস্টুন ছিঁড়ে পেলা সহ বিভিন্ন ভাবে আমার নির্বাচরে বাধা দিয়ে আসছে। অনেক জায়গায় হামলা চালিয়ে আমাদের কর্মীদের গুরুতর আহত করেছে। আমরা চাই প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু একটি নির্বাচনী পরিবেশ।
অপর দিকে ক্ষমতাসীন দলের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছে ২ নং বালিথুবা ইউনিয়নের জিএম হাসান তাবাচ্ছুম, ১৬ নং রূপসা’র শরীফ হোসেন, ১২ নং চরদুঃখিয়ার মুরাদ, ১৫ নং রূপসার ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, দলীয় ক্রোন্দলের সু-যোগে আমাদের অনেক র্শীষ নেতারা বহিরাগত গুন্ডা বাহিনী দিয়ে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করছে। তারা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। আমরা প্রশাসনকে এদের বিষয়ে সজাগ থাকার অনুরোধ করছি।