মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের কাউনিয়া কান্দি গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে আর্ম পুলিশ ব্যাটালিয়ান উত্তরা এয়ারপোর্ট এ নায়ক পদে কর্মরত আজহারুল ইসলাম সাথে গত ২০১৭ সালে মার্চের ৩ তারিখে পারিবারিক ভাবে একই ইউনিয়নের ভবেরচর এলাকার খলিল সরকারের মেয়ে উম্মেহানী আক্তার বিবাহ দেওয়া হয়েছিলো। তাদের দাম্পত্য জীবনে ৪ বছরের ও এক বছরের দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
বিয়ের সময় মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে দিনমজুর বাবা খলিল সরকার নগদ ৩লাখ টাকার সাথে আরো ৫ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের স্বর্নালংকার ও আসবাবপত্র দেন।
বিয়ের তিন বছরের পর জমি কিনে বাড়ি করার কথা বলে ফের আজহারুল ইসলাম ১০লাক্ষ টাকা দাবি করে শ্বশুর খলিল সরকারের কাছে। তার দাবিকৃত ১০ লাক্ষ টাকার মধ্যে ৫লাক্ষ টাকা পরিশোধ করে। কিন্তু বাকি ৫ লাক্ষ টাকা দিতে না পারা সহ স্বামীর পরকীয়া প্রেমে বাঁধা দেওয়ায় গৃহবধু দুই সন্তানের জননী উম্মেহানী আক্তারে উপর চালানো হয়েছে পৈশাচিক নির্যাতন।
সম্প্রতি আজহারুল ইসলামে মোবাইল ফোনে পার্শ্ববর্তী গ্রামের একটি মেয়ের খোলামেলা ছবি দেখে প্রতিবাদ করে উম্মেহানী আক্তার। তারপর থেকে উম্মেহানী আক্তারের উপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন আজহারুল ইসলাম। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার মীমাংসা করলেও আজহারুল ইসলাম আবারও অবৈধ সম্পর্ক ও স্ত্রীকে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন। এক পর্যায় স্বামীর বাড়ি থেকে বাপের বাড়ি অবস্থান করেন উম্মেহানী আক্তার।
উম্মেহানী আক্তার বলেন, ওই নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্কের জন্য গত চার বছর আমার উপর নির্যাতন করে আসছে। গত এক বছর প্রতিদিন আমাকে মারধর করে আমার স্বামী। এমনও দিন আছে আমাকে ও আমার সন্তানদের না খেয়ে থাকতে হয়েছে। পরে বাধ্য হয়ে বাপের বাড়ি চলে আসি।
তিনি বলেন, গত ৫ই জানুয়ারী ১০ দিনের ছুটিতে আসে আমার স্বামী এবং সন্ধ্যায় তার বাড়ি থেকে এশারের পরে আমাদের বাড়িতে এসে পাঁচ লাক্ষ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে এবং ওই নারীর সাথে কথা বলতে বারণ করায় আবারও নির্যাতন শুরু করে। ঘরের দরজা বন্ধ করে আমাকে বেধড়ক চড়-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারধর করতে থাকে। আমার ডাক চিৎকারে পাশের রুম থেকে আমার বড় বোন এবং ভগ্নিপতি আসে তাদের কেও মারধর করে। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে আমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় আমি পুলিশ সুপার ১ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ান উত্তরা (ঢাকা) এবং গজারিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করি।
উম্মেহানী আক্তারের পিতা খলিল সরকার বলেন, অনেক সহ্য করেছি। জামাইকে অনেক বুঝিয়েছি। তাতেও কোন কাজ হয়নি। অবৈধ সম্পর্কের বিষয় জেনে যাওয়ায় আমার মেয়েকে প্রতিদিন নির্মমভাবে নির্যাতন করে জামায় আজহারুল ইসলাম। একাধিক মীমাংসা করেও কাজ হয়নি। আমি এবার আইনের আশ্রয় নেব। আমার মেয়ের নির্যাতনকারীর বিচার চাই। অভিযুক্ত আজহারুল ইসলামের মুঠোফোনটি বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মো. রইছ উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।