রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী-রাজশাহী রুটে এক কিলোমিটার রেল পথে তিনটি ক্রসিংয়ের মধ্যে কোনটিতে গেটম্যান নেই। উপজেলার ঝিনা, নুরনগর, বাসুদেপপুর রেলগেটের মধ্যে সবগুলো ঝুঁকিপূর্ণ। এসব রেলগেটে একদিকে যেমন গেটম্যান নেই, তেমনি রাখা হয়নি কোন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। ফলে এসব উন্মুক্ত রেলগেট দিয়ে যানবাহন এবং লোক চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সীমানার মধ্যে আড়ানী রেল স্টেশন। স্টেশন সংলগ্ন রেলগেটগুলোতে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকায় প্রায়ই মানুষ ও যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। ব্যস্ততম এলাকায় আড়ানী-পুঠিয়া সড়কের রেলগেটটির অবস্থা ঝুঁকিপূূর্ণ।
বাসুদেপপুর রেলগেট সংলগ্ন মুদি দোকান ব্যবসায়ী আলম হোসেন জানান, গেটম্যান নিয়োগের জন্য রেল কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার দাবি জানিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি। ফলে ঝুঁকি এড়াতে এ রেলগেটে আড়ানীর স্থানীয়দের উদ্যোগে অস্থায়ীভাবে দুইজন লোক নিয়োগ করা হয়েছে।
গেটম্যান লায়েব উদ্দিন ও মিলন বলেন, ট্রেন আসার সময় শুধু গেটের এক প্রান্তে বাঁশ ধরে লোক ও যান চলাচল কোন মতে বন্ধ করতে হয়। কিন্তু অপর পাশ খালি থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। তারা আরো বলেন, বর্তমানে ট্রেন চলাচলের সময় একপাশে বাঁশ দিয়ে যানবাহন আটকানো হচ্ছে। তারপরও আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। কারণ এ পথে সাধারণ যাত্রী ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা চলাচল করে।
এ তিনটি রেলগেট ঘুরে দেখা গেছে, যানবাহন এবং লোকজন এ পথে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। বাসুদেপপুর গ্রামে অবস্থিত রেলগেটটি উন্মুক্ত। রেলগেট দিয়ে আড়ানী বাসস্ট্যান্ড থেকে পুঠিয়ায় যেতে একমাত্র পথ। ফলে এ পথে অনেক ভারি ও হালকা যানবাহন নিয়মিত চলাচল করে। কিন্তু এ গুরুত্বপূর্ণ রেলগেটে নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা না থাকায় তাদের ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হতে হচ্ছে।
স্টেশন সংলগ্ন নুরনগর ও ঝিনা রেলগেটের অবস্থাও অনুরূপ। প্রায়ই এ পথে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
আড়ানীর ট্রাক চালক সোহেল রানা জানান, রাতে ট্রেনের আলো দেখে এ রেলগেটের ওপর দিয়ে সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করতে হয়। কিন্তু দিনে ট্রেন আসছে কি না তা বোঝা যায় না। ফলে রেলগেটে গাড়ি থামিয়ে দু’পাশ দেখে পারাপার হতে হয়। এসব রেল গেট দিয়ে অসংখ্য যানবাহন প্রতিদিন চলাচল করে। গত কয়েক বছর আগে এ রেলগেটে ট্রেনের ধাক্কায় দুই মটোরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছিলেন। এরপরও রেল কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
আড়ানী রেল ষ্টেশন মাষ্টার সদরুল হোসেন জানান, রাজশাহীতে রেলওয়ের বিভাগীয় অফিসে সমস্যাগুলো অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানা নেই।