গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নের ১২২নং মাছপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখলের অভিযোগ উঠেছে বুদ্ধিমন্ত বিশ^াস নামে জনৈক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়টির মাঠ দখলমুক্ত করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
বুদ্ধিমন্ত বিশ^াস মাছপাড়া গ্রামের ভূবন বিশ^াসের ছেলে।
গত মঙ্গলবার বুদ্ধিমন্ত বিশ^াস লোকজন নিয়ে টিন, কাঠ, নেটজাল ও বাঁশের বেড়া দিয়ে বিদ্যালয়টির মাঠ দখল করে নিয়েছেন।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে মাঠ দখলের সত্যাতা পাওয়া গেছে। তবে দখলকারী বুদ্ধিমন্ত বিশ^াস জায়গাটি তার নিজের বলে দাবি করেছেন। অপরদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে মাঠটি দখলমুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আমজাদ হোসেন।
বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা নিরোধ বরণ বিশ^াস জানান, ১৯৮৫ সালে বেসরকারি সংস্থা কারিতাসের অর্থায়নে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৯১ সালে এই বিদ্যালয়টি সরকারি ভাবে অনুমোদন পায়। ২০১৩সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় এলাকার শিক্ষানুরাগী অমল কৃষ্ণ বিশ^াস ৩৩শতাংশ জমি দান করে ছিলেন। এজন্য বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক হিসেবে অমল কৃষ্ণ বিশ^াসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
বিদ্যালয়টির সাবেক প্রধান শিক্ষক ও জমিদাতা অমল কৃষ্ণ বিশ^াস জানান, তিনি বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় তিনি ৩৩শতাংশ জায়গা দান করে ছিলেন। এর মধ্যে ৮শতাংশ জায়গা ছিল তার ভাতিজা বুদ্ধিমন্ত বিশ^াসের। সে কারণে অন্য জায়গা থেকে বুদ্ধিমন্তকে ৮শতাংশ জায়গা দেওয়া হয়েছিল। যা সে এখনো ভোগদখল করছে। সেই ৮শতাংশ জায়গা ভোগ দখল করা সত্যেও বুদ্ধিমন্ত জোরপূর্বক বিদ্যালয়ের মাঠের ৮শতাংশ জায়গা দখল করে নিয়েছে।
এ বিষয়ে বুদ্ধিমন্ত বিশ^াসের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, বিদ্যালয়টির মাঠে তার বৈধ ৮শতাংশ জায়গা রয়েছে। সেই জায়গায় সে ঘর তোলার জন্য টিন, বাঁশ, কাঠ নিয়েছেন।
বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিনু বিশ^াস জানান, বিদ্যালয়টির মাঠ অনেক নিচু ছিল। সরকারি অর্থে মাঠটি ভরাট করা হয়েছে। মাঠটিতে এখন শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে। মাঠ ভরাটের সময় বুদ্ধিমন্ত বিশ^াস বাঁধা দেয়নি। এখন তিনি মাঠটি তার বলে দাবি করে দখল করে নিয়েছেন। বিষয়টি তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছেন।
বিদ্যালয়টির পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সেতু বিশ^াস ও প্রমি বিশ^াস জানায়, তারা বিদ্যালয়টির মাঠে খেলাধুলা করতো। এখন আর খেলাধুলা করতে পারেনা। এমনকি বিদ্যালয় শুরুর আগে সমাবেশও করতে পারছে না। মাঠটি দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়েছে এই দুই শিক্ষার্থী।
মাঠটি দখলমুক্ত করার জন্য দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আমজাদ হোসেন।