নাটোরের সিংড়া উপজেলার রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের বিনগ্রামে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের একটি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন করা হয়েছে। সোমবার (২৮ মার্চ) দিবাগত রাতে স্কুল মাঠে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্থানীয় প্রভাত কাকুলী নামের একটি সমিতি। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও টি ভাইরাল হলে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও তে দেখা যায়, অনুষ্ঠানে জিন্স প্যান্ট ও শার্ট পরিহিত একটি মহিলা আপত্তিকর ও অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন করছে। এ সময় উর্ত্তী বয়সের যুবকেরা তার হাতে টাকা দিয়ে নাচানাচি করছে। আবার অনেকে মঞ্চে উঠে ওই মহিলার সাথে হেলে-দুলে নাচানাচির পাশাপাশি তার মাথায় টাকা ছিটিয়ে দিচ্ছে। ভিডিও টি এলাকায় যেন এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাড়িয়েছে। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ত্ব করেন স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামবাসীরা জানান, স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে এমন আপত্তিকর ও অশ্লীল নৃত্য পরিবেশন খুবই দুঃখজনক। আর স্থানীয় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এধরণের আপত্তিকর নৃত্য এটা শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রভাব ফেলেছে বলে জানান এলাকাবাসী।
অনুষ্ঠানের আয়োজক প্রভাত কাকুলী সমিতির সভাপতি ইউনুছ খান বলেন, অনুষ্ঠানের আয়োজন তার সমিতি হলেও এ বিষয়ে তিনি জড়িত নন।
এবিষয়ে অনুষ্ঠানের সভাপতি আ.লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন দেলু বলেন, যা ঘটেছে আমার অনুপস্থিতিতে ঘটেছে। আমি শুধু খেলাধুলা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ত্ব করেছি। আর নাচ-গানের সাথে আমি জড়িত নই। তবে শুনেছি গ্রামের কিছু ছেলে-পেলেরা এটা করেছে।
এবিষয়ে বিনগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল কুদ্দুস বলেন, আমরা ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলা শেষ করে বাড়ি চলে এসেছি। আর শিক্ষকদের অনুপস্থিতিতে এধরণের নাচ-গানের আয়োজন করা হয়েছে। স্কুলের কোন শিক্ষক এখানে জড়িত নয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুর রহমান বলেন, সেখানে অনুষ্ঠানের বিষয়টি তার জানা নেই। বিষয়টি তাকে ইউএনও মহোদয় জানিয়েছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে শোকজ করা হচ্ছে।
সিংড়ার ইউএনও এম.এম সামিরুল ইসলাম বলেন, স্কুল মাঠে এই ধরণের নাচ-গান পরিবেশ খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি জানার পর মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।