কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে একই কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেজাউল করিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার ভুক্তভোগী ছাত্রী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কলেজ অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজ চত্বরে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেন। কলেজ গভর্নিং বডি তাৎক্ষণিকভাবে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক রেজাউল করিম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের বেলগাছি গ্রামের মৃত হাজি নিয়ামত উল্লাহ বিশ্বাসের ছেলে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, ভেড়ামারা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের সঙ্গে আপত্তিকর কথা বলার অভিযোগ রয়েছে। একই কলেজের উচ্চমাধ্যমিক একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেন তিনি। পরে তাঁর বাড়িতেও যান ওই শিক্ষক। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী ও তার অভিভাবক গত মঙ্গলবার শিক্ষক রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। বিষয়টি কলেজের ছাত্রছাত্রীরা জানতে পেরে শিক্ষক রেজাউলের বহিষ্কার ও শাস্তির দাবিতে কলেজ চত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তখনই কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য ও শিক্ষকেরা প্রাথমিক আলোচনা করে রেজাউল করিমকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার ভুক্তভোগী ছাত্রী লিখিত অভিযোগ করেন। সেখানে সে জানায়, সোমবার কলেজে গেলে সহকারী অধ্যাপক রেজাউল করিম তাকে ডেকে একপর্যায়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। এমনকি তার বাড়িতে পর্যন্ত গিয়েছিলেন ওই শিক্ষক।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, আমার বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। ওই ছাত্রীর বাড়িতে বই দিতে গিয়েছিলাম, অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, রেজাউল করিম এর আগেও অনেকবার এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। তিনি ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক ও আপত্তিকর মনোভাব নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা বলেন। কলেজের বাইরেও এমন অভিযোগের বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি। তার নাতি-নাতনি থাকলেও তিনি যুবকের মতো আচরণ ও চলাফেরা করেন।
ভেড়ামারা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডি কমিটির সভাপতি এমদাদুল ইসলাম আতা বলেন, ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষক রেজাউল করিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।’
কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মিজানুর রহমান বলেন, কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে আপত্তিকর অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সঠিক তদন্তের জন্য কলেজ গভর্নিং বডি তদন্ত কমিটি গঠন করবে। তদন্ত করলেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।