নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের বড়খোল গ্রামের উজ্জ্বল হোসেন সংবাদ সম্মেলন করেছেন। গত ৯মাস ধরে একঘরে ও ইটের প্রাচীর দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিলেও বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করে কোন আইনি ব্যবস্থা পাননি সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন তিনি। তিনি সুষ্ঠু সমাধান পেতে প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। উজ্জ্বল হোসেন ওই গ্রামের মৃত আকবর দেওয়ানের ছেলে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাণীনগর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উজ্জ্বল হোসেন বলেন,বড়খোল উচ্চবিদ্যালয়ের সাথে আমাদের জমির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। আমাদের শতশত বছরের বসতবাড়ি রক্ষার জন্য আমার চাচা রমজান আলী জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন। জেলা প্রশাসক রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিলেও নির্বাহী কর্মকর্তা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি।এই সুযোগে বড়খোল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এলাকার প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় ২টি শয়ন কক্ষ,রান্নাঘর,গোসলখানা,টয়লেট ভেঙ্গে ফেলে এবং গাছপালা কেটে প্রায় ২ লক্ষ ৮০হাজার টাকার ক্ষতি করে। এরপর প্রায় ৭শত বর্গফুট জায়গা জবর দখল করে তিন ফিট উচুঁ করে ইটের প্রাচীর দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে উজ্জলসহ ৪পরিবারকে আবদ্ধ করে। তিনি বলেন,গ্রামের প্রধান মাতাব্বরগন ঘোষনা দেন যে,সমাজের কোন মানুষ আমাদের সাথে কথাবার্তা বলতে পারবেনা। যদি বলে তাহলে ১হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। এমতবস্থায় বাড়ী ঘর ভাঙচুরসহ আবদ্ধ করে রাখার বিষয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট আবারও আবেদন করলে জেলা প্রশাসক পূন:রায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্ত করেও এর কোন সমাধান হয়নি। এমতবস্থায় কোথাও কোন আইনগত ব্যবস্থা না পাওয়ায় ঢাকায় উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেন।উচ্চ আদালত গত ১মার্চ ৮ থেকে ২০ পর্যন্ত বিবাদীর উপর জরুরী ভিত্তিতে নওগাঁ জেলা প্রশাসককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন।নির্দেশ অনুযায়ী ২১ মার্চ এডিসি ও রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্তে এসে ৭শত বর্গফুট প্রাচীর ভেঙ্গে নেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।এর পর তার নিকট থেকে সাদা কাগজে সহি স্বাক্ষর করে নেন। কিন্তু তদন্ত ও নির্দেশের একমাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত প্রাচীর ভেঙ্গে নেয়নি। উজ্জ্বল বলেন, চলতি মাসের ৫তারিখে একটি চিঠি পেয়েছি যাতে বলা হয়েছে,বিবাদীগন প্রাচীর সরে নিয়েছেন!। এটি একদম মিথ্যে কথা। বরং প্রতিবেদন দাখিলের পর তার চাচা রমজান আলীকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেদনম মারপিট করেছে। বর্তমানে তিনি নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি সামাজিক সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের লক্ষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে উজ্জলের মা আঞ্জুয়ারা ,বড় ভাই ছামসুর দেওয়ান,আবুল কালাম,ভাতিজা রুহুল আমিন,,চাচী শিরিজান বিবিসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এব্যাপারে বড়খোল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ওই গ্রামের মাতাব্বর জাকির হোসেন সংবাদ সম্মেলনে করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,উজ্জলের শরিকানরা বিদ্যালয়ে জায়গা বিক্রি করে দিয়েছে। আমরা উজ্জলদের চলাচলের রাস্তা বাদ দিয়ে বিদ্যালয়ের জায়গায় প্রাচীর দিয়েছি। সেখানে কোন স্থাপনা ছিলনা। তাদেরকে আবদ্ধ করা হয়নি বা একঘরে করা হয়নি।
এব্যাপারে ঘটনাতদন্ত কর্মকর্তা নওগাঁ জেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিল্টন চন্দ্র রায় এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি উজ্জ্বল হোসেনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,সাদা কাগজে নয়,প্রাচীর সরিয়ে নেয়ার পর সেখানে যেন কোন স্থাপনা নির্মান না করে এমনটি উজ্জ্বল হোসেন নিজে লিখে তারপর কাগজে সহি করেছেন। এ ছাড়া তৎক্ষনাত প্রাচীর সরিয়ে নেয়ার কথা বলা হয়েছে কিন্তু প্রাচীর সরিয়ে নেয়নি এমনটি উজ্জ্বল আমাদেরকে জানায়নি।