ঈদ-উল ফিৎ্র-এর বোনাস প্রাপ্তির দাবিতে রাজশাহী নগরীর টিকাপাড়া এলাকায় কেমিকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ওষুধ কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। তবে ঘটনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সাংবাদিকরা পৌছলে বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামানো শুরু করে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাগণ। পরে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বোনাস প্রদানের আশ^াস দিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে প্রতিশ্রুতি পালন না করা পর্যন্ত কর্মচারিরা তাদের দাবিতে অবস্থানে অটুট থাকবেন বলে জানানো হয়।
জানা গেছে, প্রতিদিনের ন্যয় শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সকালে কাজে এসে পূর্ব ঘোষিত প্রতিশ্রুতি মোতাবেক কর্মস্থলে আসেন শ্রমিকরা। শুক্রবার সকালে এসব শ্রমিকদের ঈদ বোনাস দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এদিন সকালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয় ঈদের আগে বোনাস দেওয়া সম্ভব নয়। আর এ কথা শোনা মাত্রই ক্ষোভে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। পরে প্রশাসানের হস্তক্ষেপে বোনাস দেওয়ার আশ^াস দেওয়া হলে দুপুরের আগেই বিক্ষোভ স্থগিত করা হয়।
কর্মরত শ্রমিকরা জানান, কারখানায় প্রায় দুই শতাধিকের বেশি কর্মী কাজ করেন। এর মধ্যে ৬০-৬৫ জন শ্রমিক মাসিক বেতনের ভিত্তিতে রয়েছে। আর বাকি শ্রমিকদের কাজ করানো হয় দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে। শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হলেও এক সপ্তাহ ধরে তাদের বলা হয়েছে ঈদের আগেই বোনাস দেওয়া হবে। কিন্তু বোনাস দেওয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করছেন।
এ সময় কারখানার কর্মরত শ্রমিক লাবনী জানান, গত কয়েকদিন থেকে ঈদের বোনাস দেওয়ার কথা বলে আমাদের কাজ করিয়ে নিচ্ছে। বোনাস দেওয়ার কথা বলে শুক্রবার ছুটির দিনেও আমাদের কাজে আসতে বলা হয়েছে। কিন্তু আসার পর জানানো হয় ঈদের আগে বোনাস দেওয়া হবে না তাই আমরা কর্মবিরতি রেখেছি।
শ্রমিক আসিয়া জানান, শুধু ঈদের বোনাসই নয় প্রতি মাসে বেতন পেতেও আমাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। গড়িমসি করে এক মাসের বেতন সিস্টেম লসে রয়েছে।
এ বিষয়ে কেমিকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ম্যানেজার আমিনুল হক বলেন, কিছুদিন আগে এই কোম্পানির মালিক মারা যাওয়ায় দায়িত্বে আছেন তার সন্তানরা। আর একদিকে শীর্ষ কর্মকর্তার মৃত্যু অন্যদিকে করোনা মহামারী। ফলে এ অবস্থায় করোনাকালীন সময় পার করতে গিয়ে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। তবে সমাধানের চেষ্টা চলছে। আশাকরছি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বোনাস প্রদানসহ অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
এ ঘটনায় নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাজদার হোসেন জানান, বেতন বোনাসের দাবিতে কেমিকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ওষুধ কারখানায় শ্রমিকরা কর্মবিরতি রেখে বিক্ষাভ করছে এমন খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এরপর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে পারেনি। আর কোম্পানির পক্ষ থেকে বোনাস পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তারপরেও যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।