রাজশাহীর তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কারুজ্জামান মিয়া ফোন রিসিভ করেন না, তা পুলিশের জেলা পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবগত নন। তবে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাজে কোনো ব্যাঘাত না ঘটলেও সাংবাদিকদের তথ্য পাওয়া ও তা সরবরাহ করতে অতি মাত্রায় যে ভোগান্তি ও কষ্ট হচ্ছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি যে ফোনকল সহজে রিসিভ করেন না, তা শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানিয়ে বলেন শুধু আপনাদের নয়, বর্তমান ওসি কামরুজ্জামান আমাদেরও ফোন রিসিভ করেন না। কয়েক দিন আগে আমাদের পাড়ায় চুরি ও মারামারি হয়েছে। পরে বিষয়টি ফোনে জানানোর জন্য ওসি সাহেবের সরকারি নম্বরে বেশ কয়েক বার ফোন দেয়া হয়। কিন্তু তিনি রিসিভ করেননি। তাহলে খরচ করে ওসিকে সরকারি ফোন দেয়া কি দরকার বলে আক্ষেপ করেন ওই শিক্ষক। নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, উপর মহলে ওসি কারুজ্জামান মিয়ার ভাল হাত রয়েছে। তাই তিনি এসবের তোয়াক্কা করেন না।
তবে রাজশাহীর পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানিয়েছেন, সরকারি ফোন যথা সম্ভব ধরা উচিত। ঠিক আছে আপনি বলছেন বিষয়টি নিয়ে তাঁকে বলবো। একজন গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে ওসি’র আরও বেশি সজাগ ও যতœশীল হওয়া প্রয়োজন বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এ প্রসঙ্গে শুধু এই প্রতিবেদক নয়, জেলা পর্যায়ের বেশ ক’জন সাংবাদিক তানোরে ঈদের পরে আত্মহত্যা ও বিদ্যুৎ স্পর্শ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা জানতে ওসিকে বেশ কয়েক বার সকালে ও বিকেলে ফোন দেন। এতে তারাও একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন উল্লেখ করে জানান, সরকার যখন তথ্যপ্রবাহ সুবিধা নিশ্চিত করতে যাচ্ছে, ঠিক তখনই তথ্য পেতে এ ধরনের বাধার বিষয়টি অনাকাংক্ষিত। তাছাড়া ওসি পদটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল পদ। এই পদে থেকে সাংবাদিকদের ফোন রিসিভ না করা খুবই দুঃখজনক।
উল্লেখ্য, গেলো বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তানোর পৌর এলাকার রায়তান বড়শো মহল্লায় বিদ্যুতের মেইন লাইনের তার চুরি করার সময় তানোর মুন্নাপাড়া মহল্লার আফজাল হোসেনের পুত্র মাহাফুজুর রহমান রাব্বী (২২) বিদ্যুৎ স্পর্শ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু বরণ করে। এহেন ঘটনায় নিহতের লাশ জমির আইলে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেবার জন্য মোবাইল করা হয়। কিন্তু ওসির ফোন রিসিভ হয়নি। এরআগে গেলো বুধবার দুপুরে উপজেলার তাঁতিহাটি গ্রামে একটি আম গাছের ডালে গলাই দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে মানষিক ভারসাম্যহীন যুবক কাউসার আলী (২৭)। বাড়ি নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার কুসুম্বা গ্রামে। ঘটনাটি জানানোর জন্য ওসিকে একাধিকবার ফোন দেয় গ্রামবাসী। কিন্তু ওসির ফোন রিসিভ হয়নি। পরে থানায় গিয়ে জানানো হয় বলে জানান ওই গ্রামের বাসিন্দা মিজান।
সর্বশেষ শুক্রবার দিবাগত রাতে এক ডিপের তার চুরি হয়। এসব ঘটনার সর্বশেষ পরিস্থিতি ও পুলিশের নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তানোর থানার ওসি’র কাছ থেকে এ উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকরা ভোগান্তির শিকার হন।