গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ধান কাটার জন্য তীব্র শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। এজন্য বোরো আবাদীরা পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
এ দিকে ঘুর্ণিঝড় ‘আসনি’ আসার খবর প্রতিদিন প্রচার করে দ্রুত ধান কাটার জন্য মাইকিং করছেন উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অফিস।
এ বছর এ উপজেলায় ২৫হাজার ৪শত ৭০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিসার নিটুল রায়।
তিনি বলেন, আমাদের আবাদি জমির ধান প্রায়ই কাটার উপযুক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত এ উপজেলার ২০শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে।
এই গতিতে ধান কাটলে আগামী মঙ্গলবার (১০ মে) পর্যন্ত আরো ২০শতাংশ জমির ধান কাটা হতে পারে বলে জানিয়েছেন এই কৃষি অফিসার। তিনি আরো বলেন, যদি ১১মে ঝড় হয়েই যায় সে ক্ষেত্রে এ উপজেলায় আবাদি জমির ৬০ শতাংশ ফসলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলার কুরপালা গ্রামের রুহুল সিকদার বলেন, আমি এ বছর ১০বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছি। এখন পর্যন্ত শ্রমিকের অভাবে ১বিঘা জমির ধানও কাটতে পারিনি। এ অবস্থায় ঝড় বৃষ্টি হলে আমার ১০ বিঘা জমির ফসলই নষ্ট হয়ে যাবে।
মাঝবাড়ি গ্রামের সুলতান শেখ বলেন, আমি এ বছর ৫বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছি। প্রতি বছর এই মৌসুমে শ্রমিক সংকট থাকায় বাগেরহাট থেকে শ্রমিক এনে ধান কাটাই। এ বছর শ্রমিক ঠিক করেছি। ১-একদিনের মধ্যে তারা চলে আসবে। এর মধ্যে যদি ঝড় হয় তাহলে আমি একটি ধানও ঘরে তুলতে পারবোনা।
উপজেলার শুয়াগ্রাম ও কান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান যজ্ঞেশ^র বৈদ্য অনুপ এবং তুষার মধু বলেন, আমাদের ইউনিয়নের অধিকাংশ ফসলী জমিই একটু নিচু এলাকায়। এ সকল জমিতে এবছর একটু দেরীতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। এ সকল জমির ধান অনেক স্থানেই এখনো শতভাগ পাকেনি। তারপরেও আমরা এলাকায় দ্রুত ধান কাটার জন্য মাইকিং করছি। যাতে জনগন ১-২দিনের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তুলে নেয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, বোরো আবাদীরা যাতে তাদের ফসল দ্রুত কেটে ঘরে তুলে নিতে পারেন তার জন্য আমরা নানা ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সে সকল এলাকায় শ্রমিক পাওয়া যায় সে সকল এলাকায় উপজেলা কৃষি অফিস থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে। যাতে বোরো আবাদীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারেন। এ ছাড়া এ দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারি ভাবে সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।