মঙ্গলবার (১০ মে) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম কুষ্টিয়ায় আলোচিত তিন খুন মামলায় একজনকে আমৃত্যু ও ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পলুতা ভাঙ্গা গ্রামের আসকর সরদারের ছেলে ফারুক সরদার, ইবি থানার পশ্চিম আবদালপুর গ্রামের ইসারত আলী রেজার ছেলে কালু, কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়া এলাকার মজনুর ছেলে রোহান।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, ঝিনাইদহর হরিনাকুন্ডুর বাহাদুরপুর এলাকার মৃত খোরশেদ মন্ডলের ছেলে ফারুক মন্ডল, একই উপজেলার ভায়না গ্রামের জাবেদ আলীর ছেলে আলতাফ মেম্বার, জলিল শেখের ছেলে লিয়াকত, এছেম শেখের ছেলে মনোয়ার হোসেন, করিমপুর গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে জমির উদ্দিন, আনসার শেখের ছেলে আকাউদ্দিন, কুষ্টিয়ার ইবি থানার খোর্দবাখাইল গ্রামের আবু বক্করের ছেলে নুরুল এবং মাঝপাড়া এলাকার মৃত ওম্মাদ মন্ডলের ছেলে খাকচার মন্ডল।
তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলা থেকে ১১ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।খালাস পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন মোমিন, কাইয়ুম, সজিব আকতার, ইব্রাহিম, আমিরুল, আছরোফ, শামিম, রফিকুল, বাবুল এবং তুজাম হোসেন। এ সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ৮ আগস্ট কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানার কাইয়ুম সাখাওয়াতী নিখোঁজ হন। ১০ আগস্ট কুষ্টিয়া শহরের সাদ্দাম বাজার এলাকায় গণপূর্ত অফিসের গেটের সামনে কাইয়ুম সাখাওয়াতী, আইয়ুব আলী ও শামসুজ্জামানের খ-িত মাথা পাওয়া যায়। এসব মাথা উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ। সেদিন ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয় মাথা তিনটি। একই দিন মাথাবিহীন তিনটি মরদেহ উদ্ধার হয় কুষ্টিয়া থেকে প্রায় ১৭কেলোমিটার দুরে ইবি থানার সোনাইডাঙ্গা এলাকার একটি পটলক্ষেত থেকে। উদ্ধার করা তিনটি মরদেহ মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত কাইয়ুম সাখাওয়াতীর ভাই মুহাম্মদ আব্দুল হাই বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থানায় এজাহার করেন।
মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে ১০ মে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। আজ আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
পিপি বলেন, আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তিনজনকে আমৃত্যু ও ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ১১ জনকে খালাস দেন। আসামিদের সবাইকে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।