আংশিক দাবি পূরণ হওয়ায় দুইদফার আন্দোলনরত দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির দেশি শ্রমিকদের আংশিক দাবি পূরণ হওয়ায় রোববার (১৫ মে) থেকে কাজে যোগ দিতে শুরু করেছেন।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিরখনির চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের অধিনে কর্মরত এক হাজার ১৪৭ জন শ্রমিকদের মধ্য থেকে রোববার ২১২ জন শ্রমিক কাজে যোগদান করেছেন। এসব শ্রমিক খনির অভ্যন্তরে এক সপ্তাহের কোয়ারেন্টাইন থাকার পর কাজে যোগ দেওয়ানো হবে।
একারণে শনিবার সকালে প্রথম দফায় ২১২ জন শ্রমিক করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এরমধ্যে যেসব শ্রমিকের করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ ফলাফল আসবে শুধুমাত্র তারাই খনির অভ্যন্তরে প্রবেশ করে সপ্তাহব্যাপী কোয়ারেন্টাইন থাকার পর কাজে যোগ দেবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, একই প্রক্রিয়ায় প্রতি সপ্তাহে ২০০ জন করে মোট ৮৫০ জন শ্রমিককে পর্যায়ক্রমে খনি অভ্যন্তরের কাজ নেওয়া হবে।
এর আগে শুক্রবার (১৩ মে) রাতে খনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আন্দোলনকারী দেশিশ্রমিকদের একটি প্রতিনিধি দলের এক সমঝোতা বৈঠক হয়। বৈঠকে খনি কর্তৃপক্ষ আন্দলনকালী শ্রমিকদের আংশিক পূরণ করায় শ্রমিকরা তাদের আন্দোলন স্থগিত করে কাজে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন।
কাজে যোগ দেওয়ার বিষয়ে আন্দোলনকারি বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিশ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান বলেন, গত শুক্রবার (১৩ মে) রাতে খনি কর্তৃপক্ষের সাথে শ্রমিকদের সমঝোতা বৈঠক হয়। বৈঠকে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবির মধ্যে আংশিক দাবি পূরণ করায় আন্দোলন স্থগিত করে কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে শনিবার সকালে মোট ৮৫০ শ্রমিকদের মধ্য থেকে ২১২ জন শ্রমিককে করোনার পরীক্ষা করা হয়েছে। রোববার (১৫ মে) তারা খনির অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এক সপ্তাহের কোয়ারাইন্টাইন সম্পন্ন করে নিজ নিজ কাজে যোগদান দেবেন। একই প্রক্রিয়ায় পর্যয়ক্রমে প্রতি সপ্তাহে ২০০ জন করে মোট ৬০০ জন শ্রমিককে খনিতে কাজের জন্য নেওয়া হবে। অবশিষ্ট ২৫০ শ্রমিক পরবর্তীতে কাজে যোগ দেবেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, গত শুক্রবার (১৩ মে) রাতে শ্রমিকদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে শনিবার ১৮৮ জন শ্রমিকের করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। ফলাফল পেলে তারা খনির অভ্যন্তরে প্রবেশ করবেন এবং ৭ থেকে ১০ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর কাজে যোগ দেবেন। একই ভাবে ১০ দিন পরপর ২০০ জন করে মোট ৬০০ জন শ্রমিক কাজে যোগ দেবেন। ৬০০ জন শ্রমিকের কাজের প্রেক্ষিতে চতুর্থ মাসে ১০০ জন শ্রমিক বের হয়ে নতুন করে ১০০ জন প্রবেশ করবেন। একইভাবে পর্যায়ক্রমে অবশিষ্ট শ্রমিকরাও কাজে যোগ দেবেন। বর্তমানে খনির উৎপাদন কাজ বন্ধ রয়েছে। নতুন ফেজের উন্নয়ন কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের শ্রমিকরা গত ১১ এপ্রিল খনি কর্তৃপক্ষের কাছে একটি স্মারক লিপি প্রদান করেন। ওইদিন ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী মাস ব্যাপী বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন।