বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, হারিয়ে যাওয়া গনতন্ত্র খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে এ দেশের গণতন্ত্র আবার ফিরে আসবে। এ সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। একইসঙ্গে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন করতে হবে। দেশের জনগণ এখন বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। এজন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। দেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে।
শনিবার দিনাজপুর ইনস্টিটিউট মাঠ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, আজ দেশে একটা কঠিন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ১৯৭১ সালে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তির দেশের জন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। কিন্তু আজ আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে আমরা হতাশ হয়ে পড়ছি। আওয়ামী লীগ বর্তমানে বাংলাদেশকে স্বৈরাচারী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এখন টেলিভিশন, পত্রিকাসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম দেখলে শুধু হত্যা, ধর্ষণ, রাহাজানির খবর ছাড়া কিছুই দেখা যায় না।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আজকে প্রশাসনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে দলীয়করণ করেছে এই সরকার। দিনাজপুর সংগ্রামের জনপদ, এই অঞ্চলের মানুষ সংগ্রাম করতে জানে। তাই এই জেলায় প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পদচারণা ছিল। এমনকী তিনি নিজের জীবন সঙ্গিনী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন দিনাজপুরের কন্যা বেগম খালেদা জিয়াকে। কিন্তু তিনি আজ মিথ্যা মামলায় গৃহবন্দি হয়ে আছেন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত শুক্রবার বলেছেন, যেসব নেতারা হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করে পাচার করেছেন তাদের আওয়ামী লীগে জায়গা হবে না। তাহলে আপনি নিজেই স্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা দুর্নীতি করে টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। আজ আপনাদের দুর্নীতির সীমা এতটাই বেড়ে গেছে যে, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মতো একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থগিতাদেশ দিয়েছে।
এর আগে জেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল উদ্বোধন করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। পরে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান টুকু, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, ড্যাব নেতা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, রংপুর বিভাগীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক, সম্মেলন ও কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মিসেস রেজিনা ইসলাম’র সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রংপুর বিভাগীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও দিনাজপুর পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব এ্যাড. আনিসুর রহমান চেধুুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর পর ১৪মে জেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।