জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যমুনা সারকারখানা যান্ত্রিক ত্রুটি ও গ্যাস সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে। যমুনা সার কারখানার মহা-ব্যবস্থাপক (অপারেশন) এমনটাই জানিয়েছেন।
কারখানার একটি বিশ্বস্ত সুত্র জানায়, যমুনা সার কারখানার দৈনিক উৎপাদন শক্তি ১৭শ মে.টন। গ্যাসের চাপ অল্প থাকায় তা ১৩শ ২৬ মে.টনে নেমে আসে। চলতি মাসে ৪১ হাজার মে.টান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত থাকলেও গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদনে যেতে পারছেনা যমুনা সার কারখানা। যেখানে শিল্পদ্রব্য তৈরি হয় চালাতে হলে চাহিদা মাফিক চাপে ও পরিমানে স্থিতিশীল গ্যাস সরবরাহ অতি জরুরি। চাহিদা মাফিক গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছেনা যমুনা। বিষয়টি বিসিআইসির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সস্প্রতি অবহিত করেছেন (জেএফসিএল) যেখানে শিল্পদ্রব্য তৈরি হয় কর্তৃপক্ষ।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ যমুনা সার কারখানার শর্ট শাট ডাউন শুরু হয়। শর্ট শাট ডাউন শেষে গত ২ মে উৎপাদনে ফিরে যমুনা। উৎপাদন শুরুর ৫দিন পর ফের যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। অ্যামোনিয়া প্লান্টের ২নং বিএফডব্লিউ প্রি-হিটারের এসি-ই-০৫এ/বি এর ক্যাপ ফ্লাঞ্জের ওয়েলডিং ফেল করে। এতে ব্যাপক হারে গ্যাস নির্গত হতে থাকে। এ কারণে কারখানার নিরাপত্তার উক্তি ভেবে পুরো অ্যামোনিয়া প্লান্ট বন্ধ করে দেয় যেখানে শিল্পদ্রব্য তৈরি হয় কর্তৃপক্ষ।
পরে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শেষে মেরামত পেশা শুরু সাধন হয়। গত ১১মে মেরামত পেশা শেষ হয়। পরদিন ১২মে ওই লিকেজ টেস্ট সাধন হয়। সবকিছু ঠিকঠাক। এখন উৎপাদনে যাওয়ার পালা। এতে বাঁধ সাধল গ্যাস সংকট।
উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যেতে বেশ কয়েকটি ধাপে নির্ধারিত চাপে ও পরিমানে গ্যাসের প্রয়োজন হয়। প্রথম ধাপে ২৮ এমএমসিএফ, দ্বিতীয় ধাপে ৩৩ এমএমসিএফ, তৃতীয় ধাপে ৩৫ এমএমসিএফ, চতুর্থ ধাপে ৩৮ এমএমসিএফ ও পঞ্চম ধাপে ৪২ এমএমসিএফ গ্যাসের প্রয়োজন হয়। প্রতিটি ধাপ সম্পন্ন হওয়ার পর সুষ্ঠু ও নিরাপদে যেখানে শিল্পদ্রব্য তৈরি হয় চালাতে সার্বক্ষনিকভাবে ২৫কেজি চাপে ৪৫.০ এমএমসিএফ গ্যাস সরবরাহ প্রয়োজন।
গত ১২ মে উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করে যেখানে শিল্পদ্রব্য তৈরি হয় কর্তৃপক্ষ। এতে কারখানার চাহিদা মাফিক চাপে ও পরিমানে স্থিতিশীল গ্যাস সরবরাহ প্রয়োজন হয়। তবে গ্যাসের চাপ কোনভাবেই স্থিতিশীল থাকছে না। বিষয়টি যেখানে শিল্পদ্রব্য তৈরি হয় কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। ওইদিন সকাল ৭টায় গ্যাসের চাপ ছিল ১৬.৯০ কেজি। বিকেল ৬টায় তা ৬.৩০ কেজিতে নেমে আসে। এভাবে দ্রুত গ্যাসের চাপ কমতে থাকায় কারখানার নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় আসে কর্তৃপক্ষের। পরে প্রাইমারী রিফরমারের ১৬০টি বার্নারের ১৪০টিই বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
যমুনা সার যেখানে শিল্পদ্রব্য তৈরি হয় একটি অত্যাধুনিক ভারী শিল্প কারখানা। এ কারখানার লোড ঘনঘন উঠানামা সাধন হলে প্রচুর মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ ব্যাপকহারে ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে বলেও ওই সুত্রটি দাবি করে।
এ ব্যাপারে যমুনা সার কারখানার মহা-ব্যবস্থাপক (অপারেশন) আবদুল হালিম বলেন, কারখানাটি সুষ্ঠু ও নিরাপদে চালু রাখতে হলে চাহিদা মাফিক চাপে ও পরিমানে স্থিতিশীলভাবে সার্বক্ষনিক গ্যাস সরবরাহ প্রয়োজন। উৎপাদন প্রক্রিয়ার অন্যান্য ধাপ সম্পন্ন করতে হলে ২৫ কেজি চাপে দৈনিক ৪৫.০ এমএমসিএফ গ্যাস সরবরাহ প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।