বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেছেন, বিদেশে টাকা পাচারের গডফাদার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের কিছু হচ্ছে না। তিনি দেশের বাইরে চলে গেছেন। তার ভাই বাবর গ্রেফতার হয়। কিন্তু তার কিছু শুনিনা। আমরা শুধু রুবেল-বরকতের কথাই শুনি। গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ লুটপাট ও দুর্নীতি করে ১১ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তাদের সীমাহীন দুর্নীতি-লুটপাটের কারণে দ্রব্যমূল্য আজ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে।
আওয়ামী সন্ত্রাস- দমনের প্রতিবাদে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুরের কোর্ট চত্বরে রোববার (১৫ মে) দুপুরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খায়রুল কবির খোকন একথা বলেন। তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদের বাড়িতে হামলারও নিন্দা জানান।
এসময় খায়রুল কবির খোকন বলেন, ‘গত ১৪ বছরে আমরা জর্জরিত। ১ লাখ ১ হাজার মামলা, ৩৫ লাখ আসামী, ৩ হাজার লোককে গুম করা হয়েছে। ৩ হাজার লোককে জুডিশিয়াল কিলিং করা হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীরা আজ ঘরে থাকতে পারেন না। আমার বিরুদ্ধেই ৭৫টি মামলা। প্রতিদিন ৫/৬টি মামলায় হাজিরা দিতে হয়। এখন ক্ষুদ্রস্বার্থ বিসর্জন দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘একজন এমপিকে ৬ জন পুলিশ পাহারা দেয়। ৬শ’ পুলিশ দিয়ে হলেও এই মাফিয়া সরকারের এমপি-মন্ত্রীরা রেহাই পাবেনা। মানে মানে সরে পড়ুন নইলে শ্রীলঙ্কার চেয়েও খারাপ দশা হবে।’
ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ঈসার সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন কৃষকদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক আজম খান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এএফএম কাইয়ুম জঙ্গি, খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, গোলাম রব্বানি ভুইয়া রতন, কোতোয়ালি থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান চৌধুরী রঞ্জন, শহর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ, মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি এমএম ইউসুফ, সাধারণ সম্পদাক রেজোয়ান বিশ্বাস তরুণ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সৈয়দ আদনান হোসেন অনু, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহরিয়ার শিথীল প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব একেএম কিবরিয়া স্বপন।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মোদাররেস আলী ঈসা বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে দেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী প্রথম শক্তি। আমরা আশা করেছিলাম স্বাধীনতার মাধ্যমে পাকিস্তানের ২১ পরিবার ধ্বংস হবে। আজ হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে তারা ২১শ' পরিবার সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগ তারেক রহমানকে ভয় পায়। কারণ তারেক রহমানের নেতৃত্বে সারাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, ২০২৩ সালে বাংলাদেশে আর কোন নীল নকশার নির্বাচন হতে দেবো না। আমাদের দাবিয়ে রাখার মতো কোন শক্তি তৈরি হয় নাই। হয় আমরা সফল হবো নইলে শহীদ হবো। মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর (উত্তর) আহ্বায়ক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করার জন্য, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য এবং জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
শহরের বিভিন্ন প্রান্ত হতে নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল সহকারে এসে বিক্ষোভ সমাবেশ যোগ দেন। সমাবেশে বিএনপির সাবেক মহাসচিব কেএম ওবায়দুর রহমান, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জালাল হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও রুকসুর সাবেক ভিপি রেজাউল করিম রাজাসহ প্রয়াত বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়।