প্রকৃতিতে এখন মধু মাস। বাজারে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুসহ নানা জাতের রসালো ফলের সমাহার। রয়েছে কচি তালের শাঁসও। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরশহরের সড়কবাজারে ভ্যানগাড়ি দিয়ে তালের শাঁস বিক্রি করছেন নাসির উদ্দিন নামের এক যুবক। তার বাড়ি পৌরশহরের দেবগ্রাম গ্রামে। গ্রীষ্মের তীব্র তাপদহে হাঁসফাঁস করা মানুষগুলো তৃষ্ণা মেটাতে ভিড় করছে তার কচি তাল ভর্তি ভ্যানগাড়ির সামনে। আর নাসির ধারালো দা দিয়ে তালের শাঁস বের করে তাদের তৃষ্ণা মিটাচ্ছে। প্রতিটি বড় সাইজের তাল ৩০ টাকা, মাঝারি ২৫ টাকা ও তার চেয়ে একটু ছোট ২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তাল বিক্রেতা নাসির জানায়, তীব্র গরমের কারণে বাজারে কচি তালের চাহিদা অনেক বেশি। এই তালগুলো তিনি কুমিল্লা জেলা শহর থেকে কিনে এনে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। তিনি আরো জানান, এখন তালের শাঁসের দাম একটু বেশি হলেও স্থানীয়ভাবে যোগন শুরু হলে দাম কমতে শুরু করবে।সড়কবাজার ব্যবসায়িক পরিচালনা কমিটির সদস্য মনিরুজ্জামান বলেন, তীব্র্র গরমে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে, কচি ডাবের দাম অনেক বেশি। তাই পিপাসা মিটাতে সাধারণ মানুষ কচি তালের শাঁসের দিকে বেশি ঝুঁকছে। এখানে বেশির ভাগ তালই বাহির থেকে আসে। চাঁদপুর, কুমিল্লা ও লাকসাম থেকে পিকআপ ভ্যান দিয়ে পাইকারি কিনে এনে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে। বেশি চাহিদার কারণে দামও বেশি। তবে কয়েক দিন পর দাম কমতে শুরু করবে।
কি এমন গুণাগুণ আছে কচি তালের শাঁসে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার -পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ হিমেল খান বলেন, একটি তালের শাঁসের ৯২ শতাংশই জলীয় অংশ, ক্যালরি থাকে ২৯, শর্করা ৬ দশমিক ৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪৩ মিলিগ্রাম, খনিজ শূন্য দশমিক ৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৪ মিলি গ্রাম। তিনি আরো বলেন, এর বেশির ভাগ অংশ জলীয় হওয়ায় শরীরে পানির চাহিদা মেটাতে সক্ষম। যদি আবহাওয়ার কারণে দ্রুত শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায় সেটিও পূরণ করতে পারে। তাছাড়া তালের শাঁস শরীরকে দ্রুত শীতল করে। এ ছাড়া অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় শরীরের কোষের ক্ষয় প্রতিরোধ করে। শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। শুধু তালের শাঁস নয়। রস ও পাকা তালও দেহের জন্য উপকারি। তাই সবারই তাল খাওয়া উচিত বলে মনে করেন এ মেডিকেল অফিসার।