রাজশাহীর বাঘায় চড়ক মেলায় হাজারো মানুষের ঢল নামে। রেবাবার দিন ব্যাপি উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের আড়পাড়া ক্ষুদ্র-নৃগোষ্টী আদিবাসী সম্প্রদায়ের আয়োজনে এই মেলা দেখতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষের ঢল নামে।
জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার দুরে আড়পাড়া গ্রাম। এই গ্রামে শিব পূঁজার উৎসবে চড়ক মেলায় আনন্দ বেদনার নানা দৃশ্য চোখে পড়ে। প্রথমে খালি গায়ে মূল সন্ন্যাসীকে মাটিতে শোয়ানোর পর ৪ জনকে দুই হাত দুই পা চেপে ধরে আঙ্গুলের মতো মোটা লম্বা দুটি লোহার বঁড়শি মেরুদন্ডের দুই পাশে ফুটিয়ে দেন। সংগে সংগে শরীর থেকে বেরিয়ে এলো রক্ত। এরপর বড়শিতে নুতুন একটি গামছা বেঁধে সন্ন্যাসীকে শুন্যে তুলে ধরে চড়ক গাছের ৩০ ফুট ওপরে ঝুলিয়ে একে একে সাত পাক ঘুরানো হয়। অন্য সঙ্গীরা মাটিতে নামিয়ে বঁড়শি খুলে দেয়। একবার শূন্যে তাকিয়ে চড়ক গাছ দেখে নেয়। এরপর হাতে দড়ি নিয়ে বঁড়শি বিদ্ব শীরর নিয়ে চড়ক গাছে ঘুরপাক খায়।
সরজমিনে, রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় নিবাস, সনজিদ মলিক, সঞ্জয় মল্লিক ও নবকুমার মল্লিককে এই পূজা উপলক্ষে আড়পাড়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উঁচু একটি খুঁটি পুতা হয়েছে। সেই খুঁটির সাথে লাগানো দড়িতে কালার সাথে ঝুলিয়ে ঘুরোনো হয়। ঘুরানো ব্যক্তিরা বাতাসা ছিটাতে থাকেন। এই বাতাসা মানুষকে কুড়িয়ে খেতে দেখা গেছে। এভাবে খুদ্র-নৃগোষ্টী আদিবাসী সম্প্রদায় পালন করেন শিব পূঁজার অংশ হিসাবে চড়ক উৎসব।
চড়কে পাক খাওয়া সনজিদ মলিক, সঞ্জয় মল্লিক ও নবকুমার মল্লিক বলেন, ভগবান সংগে থাকলে ব্যাথা লাগবে কেন। চড়ক ঘোরা কোনো কষ্টের বিষয় নয়।
এ বিষয়ে সন্যাসী নিবাস মল্লিক বলেন, বঁড়শি বিদ্ধের যন্ত্রনা তারা সহ্য করলেও প্রিয়জনরা বেশি সে যন্ত্রনা ভোগ করেন। অনেকের মন বাসনা পূর্ণের জন্য মানত করে। মানত করলে কঠিন রোগ থেকে মুক্তি মেলে।
আড়পাড়া চড়ক মেলা মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি নরহরি বলেন, শত শত বছর আগে থেকে আড়পাড়া গ্রামে চড়ক মেলা হয়ে আসছে। বাপ দাদারা এই মেলা করেছেন। আমরাও করছি।