চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে মামলা বিবাদী কর্তৃক বাদীকে অমানবিক পেটানোর ১টি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সোমবার পর্যন্ত ভিডিওটি চাঁদপুরের বিভিন্ন লোকজনের ফেসবুক আইডি থেকে শেয়ার হতে থাকে। তবে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ঘটনাটি ১৩ মে শুক্রবার সকালে ফরিদগঞ্জের ১৫ নং রূপসা উত্তর ইউনিয়নের রুস্তমপুর গ্রামে ঘটেছে বলে পুলিশ সূত্র নিশ্চিত করেছে। যাতে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন মিলে ২ লোককে বেঁধে অমানুষিকভাবে মারধর করছে।
পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৩ জনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলেন, মো. দেলোয়ার হোসেন (৬৫), মো. লোকমান হোসেন (৬৮), মাহাবুব আবদুল সোহেল (৩২)।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায়, ফরিদগঞ্জের ৩২০ হালে ১৬৫ রুস্তুমপুর মৌজার বেশ কয়েকটি দাগে ৪৮.৬২ শতক সম্পত্তি নিয়ে রুস্তুমপুর এলাকার দেলোয়ার হোসেন, লোকমান আমিন, মোশারফ হোসেন বাহার, মোজাম্মেল হোসেন, নুরুল আমিন গংদের সাথে শেখ ফরিদ মৃধা গং দের আদালতে মামলা চলমান থাকায় বিরোধ চলে আসছে। ওই সম্পত্তিগত বিরোধকে কেন্দ্র করে পূর্বেও শেখ ফরিদ গং'রা হামলার শিকার হয়। পরে উল্লিখিত ৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২৩ এপ্রিল ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে থানায় জিডি নং-১২০৬ নথিযুক্ত করে আদালতে পাঠালে এটি পরে আদালত মামলা হিসেবে গ্রহণ করে পুলিশকে তদন্ত রিপোর্ট প্রদানের দায়িত্ব দেয়।
পুলিশ পহেলা মে ওই মামলায় দেলোয়ার হোসেন ও লোকমান আমিনকে অভিযুক্ত করে বাকি ৩ অভিযুক্ত থেকে বাদ দিয়ে আদালতে তদন্ত রিপোর্ট পাঠায়। তদন্ত রিপোর্ট যাওয়ার পর আবারো ১৩ মে শুক্রবার দেলোয়ার হোসেন, লোকমান আমিন, মোশারফ হোসেন বাহার, মোজাম্মেল হোসেন ও নুরুল আমিন গং দ্বারা শেখ ফরিদ মৃধার পরিবার হামলার শিকার হয় এবং এর ১টি ভিডিও ভাইরাল হয়।
হামলায় মারধরে ক্ষতিগ্রস্থ শেখ মৃধা জানান, অভিযুক্তরা আমাদের আগে থেকেই বিভিন্ন স্থানে চুরি, ডাকাতিসহ অজ্ঞাত মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়ে আসছে। শুক্রবার সকালে আমাদের দুই ভাইকে রুস্তমপুর বাজারে একা পেয়ে দু’পা বেঁধে খুন করার পরিকল্পনা করে। সেদিন আমাদের ওপর দেলোয়ার হোসেন, লোকমান আমিন, মোজাম্মেল হোসেন বাবুল, হোসেন ফকির, সোহেল হাজী, মিজান হাজীসহ আরো কয়েকজন মিলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমাদের অমানবিক বেধড়ক মার দিয়েছে। আমরা প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এর বিচার চাই।
স্থানীয়রা কয়েকজন জানান, ভাইরাল হওয়া ভিডিও'র মারধর করা দেলোয়ার হোসেন, লোকমান আমিন, মাজাম্মেল হোসেন বাবুল ও নুরুল আমিন গং'রা অনেক প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকায় তাদের বিষয়ে কথা বলার সাহস কারো নেই। তাদের কাজই হচ্ছে মানুষকে হয়রানি করে জমি দখল নেওয়া। তাদের উপযুক্ত শাস্তি প্রার্থনা করছি।
বিষয়টি নিয়ে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর অভিযুক্ত নুরুল আমিন গংদের পাওয়া না যাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে এ ব্যপারে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শহীদ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শেখ ফরিদ মৃধা (৪০), ফয়েজ আহমেদ (৪৬) কে উদ্ধার করে এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।