খুলনার বটিয়াঘাটা থানার রাইঙ্গামারী মৌজায় ভূমিদস্যু সুমন বাহিনী কর্তৃক জোর পূর্বক নিরীহ জমি মালিকদের গাছ-পালা কর্তন ও ঘেরা-বেড়া ভাংচুর ও জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিকার পেতে ২০-২৫ জন জমি মালিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সোমবার দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবের হুমায়ূন কবির বালু মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে জমি মালিকদের পক্ষে আব্দুল গফ্ফার শেখ লিখিত বক্তব্যে বলেন, তারা ২০-২৫ জন সাধারণ নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ খেয়ে-না খেয়ে অনেক কষ্ঠার্জিত অর্থে সামান্য জমি কিনে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাসের জন্য জেলার বটিয়াঘাটা থানাধিন রাইঙ্গামারী মৌজায় (সাবেক জে.এলনং- ০৫, হাল জে.এল নং-১৪, সি.এসখতিয়ান নং- ১৯২, সি.এস দাগ নং ১২৯, ১৩০ ও ৭৬৮ এস.এখতিয়াননং ৯৮, এস.এ দাগনং- ১২৯, ১৩০ ও ৭৬৮) ২০০৬ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে জমি ক্রয় করে ভোগ-দখলে আছেন। এসব জমি নিজ নামে নাম পত্তন করতঃ জমির চতুর্পাশে ঘেরা-বেড়া দিয়ে বিভিন্ন প্রকার ফলজ ও বনজবৃক্ষ রোপন করেছেন। ২০২২ সাল (বাংলা-২০২৮) পর্যন্ত জমির খাজনাও পরিশোধ রয়েছে। এভাবে দীর্ঘ প্রায় ১৫-১৬ বছর ধরে ভোগ-দখলে থাকার পর সম্প্রতি সুমন বাহিনী নামে স্থানীয় একটি ভূমিদস্যু চক্র আমাদেরকে আমাদের ক্রয়কৃত এবং দখলে থাকা জমি থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে ভূমিদস্যু হিসেবে চিহ্নিত শফিকুল ইসলাম সুমনের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্যরা গত ২২ মার্চ বিভিন্ন প্রকার আগ্নেয়াস্ত্রসহ আমাদের জমিতে প্রবেশ করে হামলা চালিয়ে বিভিন্ন প্রকার ফলজ ও বনজবৃক্ষ কেটে এবং জমির ঘেরা-বেড়া ভাংচুর করে। এ সময় নগরীর ৩নং কাশেম সড়কস্থ (আলকাতরা মিলের সামনে) মোঃ লিয়াকত হোসেনের পুত্র বাহিনী প্রধান মোঃ শফিকুল ইসলাম সুমন, উত্তর রাইঙ্গামারী এলাকার রমাকান্ত মন্ডলের পুত্র স্বপন কুমার মন্ডল, বটিয়াঘাটার মৃতঃ কাঞ্চন শিকদারের পুত্র মোঃ শুকুরসহ ২৫-৩০জন ছিল। খবর পেয়ে আমরা উপস্থিত হলে আমরা যেন পরবর্তিতে আমাদের জমিতে প্রবেশ না করি তার জন্য বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধামকি দেয় এবং আমাদের প্রাণনাশসহ বিভিন্ন প্রকার মিথ্যা মামলা দিয়া হয়রানী করার হুমকি দিয়ে তারা চলে যায়। এ ঘটনায় আমাদের আনুমানিক ১ লাখ ১১ হাজার টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ ঘটনায় ভূমিদস্যু চক্রের বিরুদ্ধে আমরা জমি মালিকরা (মোসাঃ রেখা বেগম ২৮ মার্চ, মোঃ নুর ইসলাম ২ এপ্রিল, আব্দুল গফ্ফার শেখ ৬ এপ্রিল এবং মোসাঃ মনোয়ারা বেগম ২ এপ্রিল) বটিয়াঘাটা থানায় সাধারণ ডায়রি করেছি। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে নূর ইসলাম, মনোয়ারা ও রেখা বেগম বাদি হয়ে খুলনার অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাও দায়ের করেছেন। তার পরও ভূমিদস্যু চক্র তাদের অবৈধ কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে এবং আমাদেরকে বিভিন্ন রকম হুমকি ধামকি দিচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, বর্তমানে তারা আমাদের জমি থেকে উচ্ছেদ করে জমিতে বালু ভরাট পূর্বক অন্য লোকদের নিকট ওই জমি বিক্রির জন্য চেষ্টা করছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ অবস্থায় ভূমিদস্যু চক্রের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপসহ অসহায় নিরীহ পরিবারগুলো যেন শান্তিপূর্ণভাবে ক্রয়কৃত নিজ নিজ জমিতে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করতে পারেন সে জন্য প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জমি মালিক মোসাঃ রেখা বেগম, মোঃ নুর ইসলাম, আব্দুল গফ্ফার শেখ ও মোসাঃ মনোয়ারা বেগমসহ ২৫টি পরিবারের অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।