সরকারী চাকুরী পাইয়ে দেয়ার কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে যশোহর কারিগারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে’র ইন্সট্্রাক্টর (ইলেকট্রিক্যাল) সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। জমি বিক্রি, জমি বন্দক ও স্বজনদের কাজ থেকে ধার করে ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়েও ভুক্তভোগী অসহায় বেকার যুবক বিকাশ কুমার কু-ুর কপালে জোটেনি চাকুরী। উল্টো তাদের নামে মিথ্যা মামলা ঠুকে দিয়েছেন ওই প্রতারক সিরাজুল ইসলাম।
ঘটনাটি ২০১৭ সালের। সে থেকে টাকা গুলি ফেরত পেতে বিকাশ কুমার কু-ু ঘুরছেন দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৪ বছর। এ প্রতিবেদকের কাছে এমননি অভিযোগ করেছেন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার শিবনগর গ্রামের ছিদাম কু-ু’র ছেলে বিকাশ কুমার কু-ু।
টাকা ফেরত পেতে ও প্রতারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভুক্তভোগী বিকাশ কুমার কু-ু ঝিনাইদহ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলাসহ সিরাজুল ইসলামের কর্মস্থল যশোহর কারিগারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে’র অধ্যক্ষ বরাবর এবং মহা-পরিচালক, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, কাকরাইল ঢাকা বরাবর দুটি অভিযোগ পত্র পাঠিয়েছেন।
ভুক্তভোগী বিকাশ কুমার কু-ু বলেন- এ ধরণের অভিযোগের ভিত্তিতে সিরাজুল ইসলামের অফিসে কিছুটা নড়চড় লক্ষ্য করা গেলেও তা মাঝ পথে এসে অদৃশ্য কারণে থেমে গেছে। প্রতারক সিরাজুলের বাড়ী কোটচাঁদপুর উপজেলার সারুটিয়া গ্রামে। তাছাড়া সে আমাদের গ্রামের জামাই। সে সূত্র ধরে সিরাজুল ইসলাম তাকে বলে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের নিরাপত্তা প্রহরী পদে লোক নিয়োগ হবে। অধিদপ্তরে তার নিজস্ব লোক আছে। কথা অনুযায়ী বিকাশ কুমার কু-ু যশোহর সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখার সিরাজুল ইসলামের ৩৪১৯৪৩৩৩নং একাউণ্টে কয়েক দফায় ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা প্রদান করেন। বিকাশ কুমার কু- বলেন- আমি ওই নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় পাশ করি। মৌখিক পরীক্ষায়ও অংশ নিই। কিন্তু আমার চাকুরী হয়নি। তারপর থেকে সিরাজুল ইসলাম টাকা ফেরত দিতে টালবাহানা শুরু করে। দেনার বোঝা মাথায় নিয়ে বহু ঘোরাঘুরির পর ২০১৮ সালে তার মায়ের কোটচাঁদপুর সোনালী ব্যাংক একাউণ্টে কয়েক দফায় ৬লাখ টাকা ফেরত দিলেও বাকী ৩লাখ ৯০হাজার টাকা ফেরত দেয়নি। আমি একজন বেকার যুবক বর্তমানে মানবেতন জীবন যাপন করছি। বাধ্য হয়ে বাকী টাকা উদ্ধারে ঝিনাইদহ আদালতে সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে গত ১৩/১২/২০১৯ তারিখে মামলা দায়ের করি। সে সময় ওই মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে এলে প্রতারক সিরাজুল ইসলামের জামিন না মঞ্জুর করেন বিজ্ঞ আদালত। ওই দিন বিকালে পুনরায় সিরাজুল ইসলাম টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বাস দিয়ে মুচলেকা দিয়ে জামিন পান। বিকাশ কুমার কু-ুর আরো অভিযোগ করে বলেন- জামিনের পর চতুর সিরাজুল ইসলাম টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো তাদেরকে হয়রানীর উদ্দেশ্যে তার ও তার মা সবিতা রাণীর বিরুদ্ধে ১২লাখ টাকা হাওলাদ নিয়ে ফেরত না দেয়ার অভিযোগ এনে যশোহর বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে গত ০২/০২/২০২০ তারিখে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন প্রতারক সিরাজুল ইসলাম।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত যশোহর কারিগারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে’র ইন্সট্্রাক্টর (ইলেকট্রিক্যাল) সিরাজুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি ৬লাখ টাকা ফেরত দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন- বিকাশ কু-ু এখন মাত্র ৯০ হাজার টাকা পাবে। তবে তিনি টাকা গুলি চাকুরী দেয়ার নামে নেয়ার কথা অস্বীকার করেন। টাকা গুলি কি কারণে নিয়ে ছিলেন প্রশ্ন করা হলে তার সদুত্তর দিতে পারেন তিনি। ৩লাখ ৯০ হাজার টাকা বিকাশ কুমার কু-ুকে ফেরত দেয়ার অঙ্গিকারে আদালতে মুচলেকা দেয়ার বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন- জামিনের জন্য মুচলেকায় সহি দিয়ে ছিলাম।
এবিষয়ে আরো জানতে যশোহর কারিগারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে’র অধ্যক্ষের মোবাইলে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সরকারী চাকুরে হয়ে এ ধরণের প্রতারণার বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রালয়সহ ঊর্ধ্বতন কর্তা ব্যক্তিদের প্রতি আকুতি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী বিকাশ কুমার কু-ু।