লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে (১৫) বছর বয়সের মাদরাসা ছাত্রী রোজিনা আক্তারকে হত্যার দায়ে চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালত।বুধবার (১৮ মে) বেলা ১১ টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন। রায়ের সময় আদালতে চার আসামির মধ্যে আমির হেসেন কয়লা এবং আখি আক্তার রুমা উপস্থিত ছিলেন। বাকীরা পলাতক রয়েছে। এ ছাড়া ভিকটিম নিহত রোজিনা পৌরসভার দেনায়েতুপুর গ্রামের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিধবা মনেয়ারা বেগমের পালক মেয়ে।
জেলা জজ আদালতের সরকারী কৌঁশুলী অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রধান অভিযুক্ত আমির হোসেন আল আমিনের বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর অন্য আসামীদের সহযোগিতায় রোজিনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন ভিকটিমের মা মনোয়ারা বেগম বাদি হয়ে রায়পুর থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
পুলিশের তদন্তে ঘটনার সাথে জড়িত চারজন শনাক্ত হয়। আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে ওই চারজনে যাবজ্জীবন স্বশ্রম কারাদ-ের রায় প্রদান করেন। দ-প্রাপ্তরা হলেন, রায়পুর পৌরসভার দেনায়েতপুর গ্রামের মৃত হানিফ মিয়ার ছেলে আমির হোসেন আল আমিন ওরফে কয়লা (২৬), একই এলাকার পৌর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালামের ছেলে মো. হুমায়ূন কবির (৩৪), আবদুল মতিনের মেয়ে আখি আক্তার রুমা (২৫) ও বামনী গ্রামের মৃত মোস্তফার ছেলে মো. বাহার ওরফে জামাই বাহার (৩১)।
আদালত ও মামলা সূত্র জানায়, ভিকটিম রোজিনা আক্তার রায়পুর উপজেলার দেনায়েতপুর গ্রামের খাদিজাতুল কোবরা মহিলা মাদরাসার ৩য় শ্রেণীর ছাত্রী। ২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর সে বাড়ি থেকে দুপুরে খাবার খেয়ে মাদরাসার উদ্দেশ্য বের হয়। ওইদিন সে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। পরদিন ওই এলাকার ফারুকীয়া মাদরাসার পাশের একটি পরিত্যক্ত বাউন্ডারি ঘেরা বাগানের ভেতর রেজিনার মৃতদেহ পাওয়া যায়।
এরপর পুলিশ তদন্তে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত আখি আক্তার রুমা নামে এক নারীকে গ্রেফতার করলে সে আদালতে ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। তার জবানবন্দি অনুসারে ঘটনার মূল হোতা আমির হেসেন আল আমিন ওরফে কয়লাকে গ্রেফতার করা হয়। ২০১৭ সালের ২৮ জুন রায়পুর থানা পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত চার জনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।