রাজশাহীর বাঘায় আম বাগান কেটে পুকুর খননের অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অভিযানে লিটন আলী নামের এক ব্যক্তির ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় পুকুর খনন করা ভেকুর ব্যাটারি জব্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্টেট পাপিয়া সুলতানা এই অভিযান পরিচালনা করেন।
সংশ্লিষ্ট্র সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের একরাম হাজীর ভাগ্নে লিটন আলীর নিজ জমির আম বাগান কেটে পুকুর খনন শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিন্তপুর গ্রামের পক্ষে সিদ্দিকুর রহমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্টেট পাপিয়া সুলতানা অভিযান পরিচালনা করে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও খনন যন্ত্র ভেকুর ব্যাটারি জব্দ করে নিয়ে যায়।
ইতিমধ্যেই বলিহার গ্রামের সকাল সরকার ও স্বপন সরকার মিলে তাদের সাড়ে ৯ বিঘা জমির আমবাগান কেটে পুকুর খনন করেছেন। তারা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আমবাগানে ফলন ভালো হচ্ছে না। তাই বাগান কেটে পুকুর খনন করা হয়েছে। তেঁতুলিয়া গ্রামের জামাল সরকার প্রায় আড়াই বিঘা জমির ওপর ১০-১২ বছর আগে লাগানো আমবাগানের গাছ কেটে পরিস্কার করেছেন।
এ বিষয়ে নিশ্চিন্তপুর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ও বাবুল ইসলাম বলেন, বর্ষা মৌসুমে একরাম হাজীর ভাগ্নের নিজ জমির উপর দিয়ে পানি বের হয়ে চলে যায়। এই জমিতে পকুর খনন করা হলে নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ২০টি বাড়িতে বর্ষা মৌসুমে পানি উঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া ৪০ বিঘা জমিতে লাগানো আম গাছ গোড়ায় পানি জমে মরে যাবে।
তারা আরো বলেন, শুধু নিশ্চিন্তপুর গ্রামে না, বাঘা পৌরসভার উত্তর মিলিকবাঘা, বলিহার, চাকিপাড়া, বাজুবাঘা ইউনিয়নের বার খাদিয়া, মনিগ্রাম ইউনিয়নের তুলসীপুর, পাকুড়িয়া, আড়ানী ও বাউসা ইউনিয়নে বিভিন্ন স্থানে পুকুর খনন মহোৎসব চলছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে বাঘা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোমিনুল হক বলেন, উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে চলছে পুকুর খনন। এই পুকুর খননের মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। এই মাটি পাকা রস্তায় পড়ে শুকিয়ে ধুলাতে পরিণত হচ্ছে। এতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করলে খনন যন্ত্রের ব্যাটারি জব্দ করে নিয়ে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া সুলতানা বলেন, কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তনের মাধ্যমে ভূমি আইন অপেক্ষা করে খনন করা হচ্ছে পুকুর। ফলে কমে যাচ্ছে ফসলি জমির পরিমাণ। এ খবর পেয়ে পুকুর খননের বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করে পুকুর খনন করা ব্যক্তির জরিমানা ও ভেকুর ব্যাটারি জব্দ করা হয়েছে।