জামালপুরের মেলান্দহে দাঁতভাঙ্গা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন চলছেই। এতে দাঁতভাঙ্গা নদীর উপর নবনির্মিত গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু সেতু এবং জামালপুর-মাদারগঞ্জের মহাসড়কটি হুমকীতে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি নদীর তীরবর্তী ফসলি জমি থেকেও গভীর করে খুড়ে টপসয়েলও গ্রাস করা হচ্ছে। ফলে বৈদ্যুতিক লাইনও চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এই স্থানটি মেলান্দহ-মাদারগঞ্জের সীমান্তবর্তী-হাজরাবাড়ি পৌরসভা এবং ফুলকোচা ইউনিয়নেরও শেষ সীমানায় অবস্থিত।
স্থানীয়দের ধারণা বালি খেকুরা প্রভাবশালী মহলের একটি সিন্ডিকেট থাকায় প্রশাসনও চুপসে গেছে। বলতে গেলে প্রশাসন থেকে শুরু করে সবাইকে ম্যানেজ করেই প্রায় একবছর যাবৎ চলছে বালি উত্তোলনের মহোৎস। আগে দাঁতভাঙ্গা নদী থেকে মাটি তোলা হতো ড্রেজার বসিয়ে। এখন শুকিয়ে যাওয়া নদী এবং তীরবর্তী ফসলি জমি থেকে ভেক্যু মেশিন দিয়ে দেদারছে মাটি উত্তোলন চলছে। গত রমজান মাসে ইউএনও’র বদলির খবরে বালি খেকুরা দাঁতভাঙ্গা নদীতে তিনটি ভেক্যু মেশিন বসিয়েছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি ঘন্টায় কমপক্ষে ২০টি মাহিন্দ্রা গাড়ি মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। বালি খেকুদের হৃদয় মিয়া (২৫) জানান-আমরা খাস জমি থেকে মাটি তুলতেছি। এটাই জানি। বাকি টুকু জানেন-আরিফ ভাই।
ফসলাদিসহ বিশ^রোড-সেতু ক্ষতি জেনেও; এভাবে মাটি ও বালি উত্তোলনের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে, বালি খেকুদের আসাদুল্লাহ (৩৬) জানান-সোলায়মান এবং আমির হামজার গ্রুপটি মিলে মিশেই মাটি উত্তোলন করছি।
এ ব্যাপারে ফুলকোচা ইউপি চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম বাবু জানান-মাটি উত্তোলনের বিষয়টি আমিও জানি। কিন্তু মাটি উত্তোলনের স্থানটি দাঁত নদীর উপর সেতু এবং বিশ^রোড থেকে একটু দুরে বলা চলে। মাটিগুলো মালিকানা জমি থেকেই নেয়া হচ্ছে।
সহকারি কমিশনার (ভূমি) সিরাজুল ইসলাম জানান-আইন কারোর উর্ধ্বে নয়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোপূর্বে কিছু কৃষকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। এখনতো কেও অভিযোগ করেন না।
এ ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল জানান-কৃষি জমি থেকে টপসয়েল উত্তোলন কিংবা গর্ত করে মাটি উত্তোলন কিংবা অন্য কোনভাবে ফসলের ক্ষতির কারণ হতে পারে এমন কোনটিই করা যাবে না। আইনে সুস্পষ্টভাবে নিষেধ করা আছে।