যশোরের ঝিকরগাছায় "অশনি" নিন্মচাপের প্রভাবে পাকা ধানে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছেন কৃষক সমাজ। তারপরও ইরিবোরো চাষে কৃষকদের কাছ থেকে সেচের অতিরিক্ত বকেয়া টাকা মালিকরা আদায় করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতি বিঘা জমিতে সেচ দিয়ে নির্ধারিত দামের চেয়ে তারা ৩-৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছেন। একদিকে বৃষ্টির ক্ষতি অপরদিকে সেচে অতিরিক্ত টাকা আদায়ে কৃষকেরা অসহায় হয়ে পড়েছেন।
এদিকে সরকার নির্ধারিত মূল্য আদায় নিশ্চিত করতে গত ১৫ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সেচ কমিটির সভাপতি বরাবর আবেদন করেন নাভারণ ইউনিয়নের কলাগাছি গ্রামের ভুক্তভোগী কৃষকরা। তবে প্রশাসনের নিরবতায় নির্ধারিত দাম আদায় কার্যকর হয়নি।
কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গঙ্গানন্দপুর, শিমুলিয়া, গদখালী, পানিসারা ও নির্বাসখোলা ইউনিয়নে বৈদ্যুতিক অগভীর নলকূপে ১৫০০ থেকে ২১০০ টাকা, গভীর নলকূপের ক্ষেত্রে ১২০০-১৬০০ টাকা। মাগুরা, হাজিরবাগ, শংকরপুর ও পৌরসভায় অগভীর নলকূপে ১৬০০-২২০০ টাকা, গভীর নলকূপে ১৪০০-১৮০০ টাকা।
ঝিকরগাছা সদর, বাঁকড়া ও নাভারণ ইউনিয়নে অগভীর নলকূপে ১৭০০-২৩০০ টাকা এবং গভীর নলকূপের ক্ষেত্রে ১৫০০-২০০০ টাকা। এ ছাড়া এ মৌসুমে প্রতিবিঘা ধান চাষে ডিজেল চালিত গভীর, অগভীর নলকূপ ও এলএলপি নলকূপের ক্ষেত্রেও সরকারিভাবে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নাভারণ ইউনিয়নের কলাগাছি গ্রামের কৃষক শাহীন হোসেন বলেন, সেচের দাম নির্ধারণের কথা শুধু মুখেই শুনলাম। বিঘাপ্রতি ৫ হাজার টাকা নেওয়া অমানবিক।
আবুল হোসেন বলেন, এমনিতে বৃষ্টিতে সবাই বিপদে। এরমধ্যে প্রতি বিঘায় ৫ হাজার টাকা পানির দাম গুনতে হচ্ছে। আবু মোতালেব বলেন, ডিজেল চালিত অগভীর নলকূপের পানি নিয়ে বিঘায় ৬ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। উত্তর দেউলী গ্রামের নুরুজ্জামান বলেন, আমি বিঘায় ৪ হাজার টাকা দিয়েছি।
কলাগাছি গ্রামের পানি আসাদ বলেন, আমাদের মাঠে সব মোটর মালিক এবার বিঘায় ৫ হাজার টাকা করে নিয়েছে। আমিও সবার কাছ থেকে তাই নিচ্ছি। পার্শবর্তী চারাতলা গ্রামের পানি ব্যবসায়ী জাকির হোসেনও জানান একই কথা।
ভুক্তভোগী কৃষকদের পক্ষে অভিযোগ করা আবদুস সামাদ বলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্য আদায় নিশ্চিত করতে অভিযোগ করেছিলাম। ব্যবস্থা গ্রহন করতে দুদিন কলও দিয়েছি। কোনো রকম ব্যবস্থা না নেওয়ায় হতাশ হয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেচ কমিটির সভাপতি মাহবুবুল হক বলেন, সেচের মূল্য নির্ধারণ করে তালিকা প্রতিটি ইউনিয়নে পাঠানো হয়েছে। অতিরিক্ত টাকা আদায় করলে সেচ মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইউনিয়ন পরিষদকে বলা হয়েছে।