রংপুর চিড়িয়াখানার উটপাখিটি আবার ডিম দিয়েছে। শনিবার একটি ডিম দিয়েছে। এর আগে গত কয়েকদিনে আরও দুটি ডিম দিয়েছে পাখিটি। দুই বছর থেকে একটি খাচায় বিষন্নভাবে পাখি ডিম পাড়লেও পুরুষ সঙ্গির অভাবে বাচ্চা ফুটছে না। গত দুই বছরে পাখিটি কম পক্ষে ১০/১২টি ডিম দিয়েছে। কিন্তু বংশ বিস্তার করতে পারেনি সঙ্গির অভাবে। চিড়িয়াখান কর্তৃপক্ষ ডিম ভেঙ্গে শুধু খোসা সংরক্ষণে রাখছে। এটাই এখন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কাজ। সচেতন অনেকেই মনে করছেন উটপাখিটি বংশ বিস্তারের জন্য খুব দ্রুত একটি পুরুষ সঙ্গি আনা প্রয়োজন।
রংপুর চিড়িয়াখানা সূত্রে জানাগেছে, প্রায় সাড়ে ৩ বছর আগে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে ৬ মাস বয়সী একটি পুরুষ এবং একটি মেয়ে উটপাখি আনা হয়। দেড় বছর এক সাথে থাকার পর উটপাখিটির পুরুষ সঙ্গিটি দুই বছর আগে মারা যায়। তখন থেকেই বিষন্নমনে খাচায় এক একা দিন কাটছে পাখিটির। গত দুই বছরে এক ডজনের বেশি ডিম দিলেও পুরুষ সঙ্গি না থাকায় বাচ্চা ফুটেনি।
এই প্রজাতির পাখি সম্পর্কে জানাগেছে, মুলত আফ্রিকার সাহারা মরু ভূমির দক্ষিণের তৃণভূমি উটপাখির মূল বিচরণস্থল।বিশ্বের অনেকস্থানে উটপাখি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। বিশ্ববাজারে এর চামড়া, মাংস,পালক ইত্যাদির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই পাখি পোকা-মাকড় খায়। উড়তে না পারলেও ৭০ কিলোমিটার বেগে দৌড়াতে পারে। অঞ্চলভেদে প্রজননে ভিন্নতা রয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটি পুরুষ তার নিজস্ব এলাকা দখল করে দুই থেকে সাতটি স্ত্রী উটপাখির সাথে থাকে এবং বংশ বিস্তা করে।
উটপাখির গড় উচ্চতা প্রায় তিন মিটার। দেহের ওজন ১৫০ কেজিরও বেশি হতে পারে। এদের আছে বিশাল দুটি পাখা। পুরোটা মেলে ধরলে এর দৈর্ঘ্য হয় প্রায় সাত ফুট। পুরুষ উটপাখির পাখার রং কালো হয় এবং সঙ্গে থাকে সাদা লেজ। স্ত্রী উটপাখির পাখার রং ধূসর বাদামি। উটপাখি ৫০ থেকে ৭০ বছর উৎপাদনক্ষম থাকে এবং এরা ৮০ থেকে ১০০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। রংপুর চিড়িয়াখানার উটপাখিটি সঙ্গি ছাড়া কত বছর বাচবে এটাই এখন দেখার বিষয়। কারণ এর সঙ্গি মাত্র ২ বছর বয়সে মারা গেছে।
রংপুর চিড়িয়াখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. শাহাদৎ হোসেন জানান, পাখিটি ডিম দিয়েছিল। কিন্তু পুরুষ সঙ্গি না থাকায় ডিমগুলো ফুটেনি। তাই ডিমের ভিতরের অংশ ফেলে দিয়ে শুধু খোসা সংরক্ষণে রাখা হয়েছে।