রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় পুলিশের অভিযানে জব্দকৃত ২৫ হাজার ৭৯৪ লিটার তেল খোলা বাজারে বিক্রির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ২৮ ও ২৯ মে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) স্থানীয় দুই ডিলারের মাধ্যমে এই তেল বিক্রি করতে হবে। ভোক্তা পর্যায়ে প্রতিলিটার তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ টাকা। মঙ্গলবার (২৪ মে) দুপুরের দিকে রাজশাহীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলি আদালত-২ এর বিচারক মারুফ আল্লাম এই নির্দেশ দেন।
এই তথ্য নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও মো. আজিম হোসেন জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে জব্দকৃত ভোজ্যতেল বিলিব্যবস্থাপনার জন্য আদালত এই আদেশ দিয়েছেন। আদালত জানিয়েছেন, জব্দকৃত ভোজ্যতেলের পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ায় আলামত হিসেবে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ বেশ দূরহ। তাছাড়া দেশে ভোজ্যতেলের সংকট রয়েছে। তাই সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে আদালত টিসিবির অনুমোদিত স্থানীয় ডিলার মেসার্স মোবিদুল এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স বেলাল ট্রেডার্সকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে জব্দকৃত তেলগুলো বিক্রির নির্দেশ দেন। আর জব্দকৃত এই তেল সমান দুই ভাগে ভাগ করে ওই দুজন ডিলারকে বিক্রির জন্য বরাদ্দের নির্দেশ দিয়েছেন। একইসাথে বিক্রয় করসহ প্রতিলিটার তেলের মূল্য ১০৫ টাকা ৩৭ পয়সা বুঝে নিয়ে ডিলারদের মাঝে এই তেল বণ্টন করার জন্য বাগমারা থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর বিক্রির অর্থ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হিসাব রক্ষকের কাছে বুঝিয়ে দেবেন ওসি। এরপর আদালতের হিসাব রক্ষক সেই অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করবেন।
আদালতের জিআরও আরো জানান, আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক একজন ভোক্তা ১১০ টাকা লিটার হিসেবে সর্বোচ্চ ২ লিটার ভোজ্যতেল কিনতে পারবেন। আর এই তেল বিক্রি কার্যক্রম তদারকি করবেন থানার একজন এসআই। এ ছাড়া প্রত্যেক ডিলার পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। তেলের বাড়তি মূল্য যেন আদায় না হয় সেটিও নিশ্চিত করবে পুলিশ। তেল বিক্রি শেষে আদালতে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিল করবেন বাগামারা থানার ওসি।
প্রসঙ্গত, তেল নিয়ে কারসাজির অভিযোগে গত ৯ মে রাতে বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর বাজারপাড়া ও তেলিপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুটি গুদাম থেকে ১৯ হাজার ২২৪ লিটার সয়াবিন এবং ৭ হাজার ৫০০ সরিষার তেল জব্দ করে জেলা পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় সেখানকার তেল ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম স্বপনকে (৪০)। তবে পালিয়ে যান মজুদকা-ে যুক্ত স্বপনের বড় ভাই রফিকুল ইসলাম। এ সময় ওই দুইটি গোডাউন সিল করে তাদের দুজনের নামে বাগমারা থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন পুলিশ।